ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের মৃত্যদন্ডের আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিলের রায় জানা যাবে যে কোনো দিন।মালিবাগে স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও দন্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে তাঁদের সন্তান ঐশী রহমানের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। রোববার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহুরুল হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম। ঐশীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী প্র বলেন, ডেথ রেফারেন্স ও ঐশীর আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আদালত মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন। এখন যেকোনো দিন রায় হবে।২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট মালিবাগের বাসা থেকে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান এ ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন।ওই মামলায় ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদন্ড ও তাঁর বন্ধু মিজানুর রহমানকে দুই বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়।

একই বছরের ১৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে। পরে তা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন ঐশী।গত ১২ মার্চ ঐশীর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। জহুরুল হক জহির পরে বলেন, মোট ১৩ কার্যদিবস শুনানি হয়েছে। এখন যে কোনো দিন রায় হতে পারে।রাজধানীর চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট এসবি কর্মকর্তা মাহফুজ ও তার স্ত্রী স্বপ্নার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান পরদিন পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন।পরদিনই নিহত দম্পতির মেয়ে ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে তার বাবা-মাকে নিজেই খুন করার কথা স্বীকার করেন।

ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর এ মামলার রায় দেন।ঐশীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার পাশাপাশি হত্যায় সহায়তার দায়ে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমানকে দুই বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। তবে খালাস পান ঐশীর আরেক বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি।রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হত্যাকা-টি ছিল পরিকল্পিত ও নৃশংস। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা গেছে, ঘটনার সময় আসামি ঐশী প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। নৃশংস হত্যাকান্ড বিবেচনায় ঐশীকে ফাঁসির দ- দেওয়া হয়েছে।ওই বছর ডিসেম্বরে খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন ঐশী। সেই সঙ্গে নিম্ন আদালতের রায় ও অন্যান্য নথি হাই কোর্টে আসে মৃত্যুদ-ের অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য।এরপর চলতিবছর ১২ মার্চ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। একটি মানবাধিকার সংস্থা ঐশীর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে রিট আবেদন করার পর হাই কোর্টের দুই বিচারক গত ১০ এপ্রিল ওই তরুণীর বক্তব্য শোনেন।এ মামলায় ঐশীদের অপ্রাপ্তবয়স্ক গৃহকর্মীকেও আসামি করা হয়। তার বিচার কিশোর আদালতে চলছে।