NDI2NjY2NzU5

দৈনিকবার্তা-কুড়িগ্রাম, ৩০ জুলাই: কান্না যেন থামছেই না তিস্তাপাড়ের মানুষের। প্রতিনিয়ত তিস্তা ভেঙ্গে নিচ্ছে বসতভিটা, আবাদী জমি, মসজিদ-মক্তবসহ নানা স্থাপনা। কান্না এখন তাদের নিত্যসঙ্গী।কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্ত ঘেঁষা গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদী বিচ্ছিন্ন হরিপুর ইউনিয়নের লখিয়ারপাড়া, পাড়া সাদুয়া, কানি চরিতাবাড়ী, মাদারীপাড়া, চর মাদারীপাড়া আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে পাগলা তিস্তার ক্ষুধার্ত গর্ভে। গত তিনদিনে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ীঘর ও কয়েক‘শ একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, নদী ভাঙ্গণ অব্যাহত রয়েছে। লখিয়ারপাড়া গ্রামের রমজান আলী শেখ (৪৮), আব্দুল মজিদ (৬০), আব্দুস সাত্তার (৬২), দুলাল মিয়া (৩০), আব্দুল মান্নান (৫০) রেজাউল (৪০) এর বাড়ী ঘর নদী ভাঙ্গণে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোন মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে আরো শতাধিক বাড়ী ঘর। ভাঙ্গণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। আহাম্মদ আলী (৭০) ৬সদস্যের পরিবার তার। পাগলা তিস্তার ভাঙ্গণে সর্বস্ব বিলিন হওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছেন।

কোথায় হবে মাথা গোঁজার ঠাঁই? তিনি জানেন না। ১৬ সদেস্যর পরিবার মফিজল হক (৭৫) এর। ইতোমধ্যে ২ বার তিস্তা নদী তার বাড়ীঘর ভেঙ্গে নিয়েছে। যেখানে আশ্রয় নিয়েছে, সেটাও যেকোন মূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ভেঙ্গে গেছে ২ একর আবাদী জমিও। মৃত আব্দুস সামাদ ব্যাপারীর পুত্র আনোয়ার হোসেন (৩৫) অতিকষ্টে আধাপাকা ঘর নির্মাণ করলেও এখন সেটি নদী ভাঙ্গণের মুখে। ইতোমধ্যে তার ৪০ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কামাল (৮০), গফুর (৬৫), হামেদ আলী (৬০), হায়দার (৩৫), চাঁন মোহাম্মদ (৫৫), আনোয়ার (৩০) সহ প্রায় ৫০টি পরিবারের বাড়ীঘর গত ৪দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তীব্র ভাঙ্গণের মুখে থাকা নুরুজ্জামান (৬৫), আব্দুস সামাদ (২১), ইয়াছিন (৫৫) ও সজিরন (৪৫) জানায়, বাড়ী ভাঙ্গলে যাওয়ার কোন জায়গা নেই।

বাঁধরাস্তাতেও আগে থেকেই লোকজন বাড়ীঘর করে বসবাস করছে। ভাঙ্গণের মুখে রয়েছে শতবছরের পুরাতন মসজিদ, দু‘টি মাদ্রাসা, দু‘টি মাধ্যমিক ও ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ঐতিহ্যবাহি কাশিম বাজার হাট। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোজাহারুল ইসলাম জানান, বাঁশের বান্ডাল দিয়ে সাময়িকভাবে নদীর পানির গতি পরিবর্তন করতে পারলে ভাঙ্গণ কিছুটা হলেও কমে যাবে। তিনি সরকারের কাছে নদী ভাঙ্গণ রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জোড় দাবী জানান।