Picture Jhenaidahঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে দুইজন অফিস সহায়ক নিয়েগে বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেব প্রসাদ পাল ও তার অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফা অন্য উপজেলার নাগরিককে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। আর এই নিয়োগ পক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয় বর্তমানে বরখাস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম পলাতক থাকার সময়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য (ঝিনাইদহ-৩ আসন) মোঃ নবী নেওয়াজ জনপ্রশাসন মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

গত ৫ মে তারিখে সংসদ সদস্যের প্যাডে পাঠানো ৩/২০১৬/৩৬৫ নং স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে সংবিধান ও উপজেলা পরিষদের আইন মোতাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য হচ্ছেন পরিষদের উপদেষ্টা। সরকারের কোন উন্নয়ন বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহনের বিধান থাকার পরও কোটচাঁদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেব প্রসাদ পাল কোন সহায়তা না করে নিজের ইচ্ছা মতো করে পরিষদ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে পরিষদের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি সচ্ছতা এবং জবাবদিহীতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। লিখিত অভিযোগে সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ উল্লেখ করেন, কোটচাঁদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কার্যালয়ে দুইজন অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য আওয়ামীলীগের প্রবিন ও ত্যাগী নেতার ছেলেদের পক্ষে সুপারিশ করে একটি ডিও লেটার দেওয়া হয়। কিন্তুু আমার ডিও লেটারকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ইউএনও দেব প্রসাদ কালীগঞ্জ উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের শাফিয়ার রহমানের ছেলে আমরান হোসেন দুখু ও কোটচাঁদপুরের নওদাপাড়া গ্রামের সেলিম উদ্দীনকে নিয়োগ দিয়েছেন।

অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফার পরামর্শে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে কোটচাঁদপুরের স্থায়ী বাসিন্দাকে চাকরী না দিয়ে কালীগঞ্জের নাগরিককে অবৈধ উপায়ে চাকরী দেওয়া হয়েছে। অন্যজন জামায়াত বিএনপি জোটের সমর্থক বলেও তিনি অভিযোগ করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রীর কাছে পাঠানো লিখিত অভিযোগে এমপি নবী নেওয়াজ আরো বলেছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফা অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত। তিনি ১৯৮৮ সালে চাকরী পাওয়ার পর কোটচাঁদপুরের মেইন বাজারে গোলাম রসুল মার্কেটের বিপরীতে এক কোটি টাকা মুল্যের জমির উপর দোতালা বাড়ি করেছেন।

মহেশপুর হাসপাতালের সামনে ৪০ লাখ টাকা মুল্যের বাগানবাড়ি, একই উপজেলার মালোপাড়া ও কালীগঞ্জ শহরে ৭০ লাখ টাকার দুইটি বাড়ি হাকিয়েছেন। রাস্তায় তার ঢাকা মেট্রো-১৬-১৪১৬ নাম্বারসহ দেড় কোটি টাকা মুল্যের ৪টি গাড়ি চলে। কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদের তিন লাখ টাকার জিপ গাড়িটিও গোলাম মোস্তফা কিনে নিয়েছেন বলে এমপির অভিযোগ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে এর আগেও বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেব প্রসাদ পালের বক্তব্য জানতে শুক্রবার রাতে একাধিকবার তার সরকারী মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তার অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। সম্পদ যা আছে সবই তার স্ত্রীর নামে। তার স্ত্রী একজন সফল ব্যবসায়ী বলেও তিনি দাবী করেন। এ বিষয়ে এমপি নবী নেওয়াজ জনপ্রশাসন মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদানের কথা স্বীকার করে জানান, কোটচাঁদপুরের ইউএনও দেব প্রসাদ পাল তার কোন পরামর্শ নেন না। তিনি অফিস সহকারীর কথা মতো চলেন। তিনি আরো জানান, শুনেছি অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে। এ জন্য তিনি সাময়িক বরখাস্ত। তিনি জানান, ইউএনও দেব প্রসাদও বদলী হয়ে চলে যাচ্ছেন। তিনি বালেন, তার অভিযোগের ভিত্তিত্বে দু’জনার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশা করেন।