দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ৪ মে: ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত চরভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বেহাল দশা। বিদ্যালয়টিতে শ্রেণী কক্ষ ও বেঞ্চের সংকট থাকায় খোলা আকাশের নিচে মাটিতে বসেই চলছে কমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
২০০১ সালে চরভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টিতে ৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দ্বারা ১৭৬ জন ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠদান দেওয়া হয়। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার সময় নিজের অর্থায়নে বাঁশের বেড়া ও ঢেউটিন দিয়ে একটি অফিস কক্ষ ও ৩টি শ্রেণী কক্ষ তৈরি করা হয়। বাঁশের বেড়া ও টিন দিয়ে তৈরি শ্রেণী কক্ষে চলছিল পাঠদান।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে কাল বৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বিদ্যালয়টি। অর্থের অভাবে শ্রেণী কক্ষ সংস্কার করতে না পারায় ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের দূর্দশার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হলে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে কর্মকর্তাগণ বিদ্যালয়টিতে পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু অধ্যাবধি সরকারিভাবে শ্রেণী কক্ষ নির্মাণে কোনো উদ্যোগে নেওয়া হয়নি।
এদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান ধরে রাখার জন্য ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকমহল নিজেদের অর্থায়নে ৩টি আধাপাঁকা টিনসেট শ্রেণী কক্ষ নির্মাণ করে। ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য একটি শ্রেণী কক্ষে মাত্র ১৩ সেট বেঞ্চ রয়েছে। অপর ২টি শ্রেণী কক্ষে মাটিতে বসেই চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকমহল পাঠদান কার্যক্রম ধরে রাখতে নিজের অর্থায়নে ২০১৪ সালের জুলাই মাস থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চালু করে মিড-ডে-মিল।
গত ৩০ এপ্রিল জেলা প্রশাসক মুখেশ চন্দ্র বিশ্বাস ঠাকুরগাঁও জেলার একমাত্র মিড-ডে-মিল চালুকৃত বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে এসে সরেজমিনে দেখে যান বিদ্যালয়টির অবকাঠামো ও পাঠদানের বেহাল দশার চিত্র। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হলেও আজও পর্যন্ত এর কোন সুফল পাওয়া যায়নি।অপরদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরফান আলী জানান, বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সংকট দূর করতে সরকারিভাবে নতুন ভবন তৈরি ও ছাত্র-ছাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণ বেঞ্চ সেট সরকারিভাবে সরবরাহ করে কমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের সূব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।