Saju Tanore 25-06-2016 amon lagano suru photo-1
তানোরে আমন ক্ষেতে নেপালী স্বর্ণা ধান চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের চাষিরা। সারাদিন কাজ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা । পুরুষ শ্রমিকদের পাশাাশি আদিবাসী নারী শ্রমিকদেরই ব্যস্ত সময় জমিতে ধান রোপনের কাজে দেখা গেছে। তবে আদিবাসি নারী শ্রমিকদের অভিযোগ পুরুষদের সমান কাজ করেই ন্যায্য মজুরী পায় না। জীবনের পুরোটা সময় কৃষি শ্রমিক হিসাবে কাজ করছে। অথচ মজুরীর ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে তারা।
গতকাল শনিবাার সকালে সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, যারা আমন ধান তুলে আলু লাগাবেন। সেই চাষিরা নতুন জাতের নেপালী ধান রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আর এই ধান রোপনের ৯০ দিনে মাথায় কাটা ও মাড়ায় করা যায়। এ কারনে এলাকার চাষিরা এবার এই নতুন জাতের ধান চাষাবাদের প্রতি ঝুকে পড়েছে। এছাড়াও অন্যান্য জাতের গুড়ি স্বর্ণা, বিনা সাত, সোনার বাংলা, ৪৯ জাতের ধান রোপন করতেই দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় আমন ধানের লক্ষমাত্রা ধারা হয়েছে ২২হাজার ৩শ’হেক্টর। ইতি মধ্যেই অনেক এলাকায় আমন ধান রোপনের জন্য জমি তৈরী করতে শুরু করেছে। আবার অনেক কৃষক আগাম জাতের ধান রোপন শেষে করেছেন।
তানোর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নেপালী স্বর্ণা ধান মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে জমি থেকে কাটা মাড়াই করা যায়। ফলে এখন এই ধান রোপন করা হলে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কেটে আলু লাগানো যায়। আলু উত্তোলনের পর বোরো ধানটি সঠিক সময়ে রোপন করা যায় বলে জানান তিনি।
উপজেলার মোহাম্মাদপুর এলাকার আদিবাসী নারী শ্রমিক শ্রী বাছিরন রানি জানান, ৫০ বছর ধরে এ বৈষম্যের স্বীকার হয়েও বাঁচার তাগিদে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এমন কোন সংস্থা, এনজিও নেই। আমাদের বৈষম্যের ব্যাপারে কথা বলে। এমনকি রাস্তায় দাড়িয়ে কোন প্রতিবাদ করে।
গত শক্রবার সরজমিনে গিয়ে কথা হয় ৬ জন আদিবাসী নারী শ্রমিকদের সাথে তাদের মধ্যে পারমিলা নামে এক আদিবাসী নারী শ্রমিক তিনি তানোর এক সরকার ডিগ্রী কলেজে ডিগ্রী তালন্দ ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত। তিনি জানান, কৃষি কাজ শুরু হলে কলেজে যেতে পারি না। লেখাপড়ার পাশপাশি কৃষি কাজ করে সংসারের অন্ন যোগাতে হয়। তিনি আফসোস করে জানান, কাজ করেও ন্যায্য মজুরী পায় না আমরা। কৃষি কাজে ব্যাপক পরিবর্তন হলে আমাদের বৈষম্যের পরিবর্তন হয় নি। মনে হয় সমাজে আমরা আজীবন অবহেলিত হয়ে থাকব। একই সময় ব্যয় করে একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা পায় ২শ’ টাকা আর আমরা পাই ১শ’২০ থেকে ১শ’৩০ টাকা করে। দুপুর পর্যন্ত তারা দেড় বিঘা দুপুরের পরপর সব মিলে সোয়া দুই বিঘা জমিতে চারা রোপন করবেন বলে জানান তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, এবারে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে। কেবল মাত্র কয়েক জায়গায় চারা রোপন শুরু হয়েছে। ১ মাসের মধ্যে অনেক জমির চারা রোপন শেষ হবে বলে জানান তিনি। #