Akbor

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৫অক্টোবর: বর্তমান সময়ে দেশে সবচেয়ে লাভজনক পেশা হচ্ছে রাজনীতি৷ কারণ এখান থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়৷ তাই এখন সবাই রাজনীতিতে আসার জন্য ব্যস্ত৷ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খান এমন মন্তব্য করেছেন৷শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘চীনের সাফল্য এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন৷ সংগঠনের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন- সাপ্তাহিক ২০০০ এর সম্পাদক গোলাম মোর্তজা,অর্থনীতিবিদ আহাসান এইচ মঞ্জুর, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম প্রমুখ৷

তত্ত্বাধায়ক সরকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের রাজনীতির কোনো পলিসি নেই, আবার প্রশাসনেও বিশৃঙ্খলতা৷ তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উঠছে৷ শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সুশাসনের প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন দেশের এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ৷ আকবর আলী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সুশাসন প্রয়োজন এ মতবাদে বিশ্বাসী বিশ্বব্যাংক৷ কিন্তু বাংলাদেশে হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও বর্তমানে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি হয়েছে৷

চীনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক দেশে সুশাসন নেই কিন্তু সেসব দেশেও উন্নয়ন হয়েছে৷ এর মধ্যে চীন অন্যতম৷ কিন্তু তারা উন্নয়নে অনেক এগিয়ে গেছে এমন কি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে৷শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নয়, মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সুশাসনের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান৷

এসময় তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সুশাসন প্রয়োজন এ মতবাদে বিশ্বাসী বিশ্ব ব্যাংক৷ কিন্তু বাংলাদেশে হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতা স্বত্বেও বর্তমানে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে৷তিনি আরো বলেন, অনেক দেশে সুশাসন নেই কিন্তু সে সব দেশেও উন্নয়ন হয়েছে৷ এর মধ্যে চীন অন্যতম৷ কিন্তু তারা উন্নয়নে অনেক এগিয়ে গেছে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে৷বাংলাদেশের রাজনীতির কথা তুলে ধরে ড. আকবর আলি খান বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে সবচেয়ে উত্‍কৃষ্ট পেশা হচ্ছে রাজনীতি৷ এখান থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়৷ তাই এখন সবাই রাজনীতিতে আসার জন্য ব্যস্ত৷

আকবর আলী খান বলেন, চীনের বর্তমান সাফল্য অসাধারণ নয়, অনন্য সাধারণ৷ ইংল্যান্ডের ৫৭ বছরে মাথাপিছু আয় দিগুণ হয়েছিল, আর গত ৩০ বছর ধরে প্রতি ১০ বছরে চীনে মাথাপিছু আয় দিগুণ হচ্ছে৷ চীন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেও এখনও অনেক কিছু করার আছে৷ সুশাসনের দিক থেকে চীন পিছিয়ে আছে৷ একটা দেশ যখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যায় তখন সুশাসন অপরিহার্য হয়৷ অথনৈতিক উন্নয়নের চেয়ে সুশাসন বেশি দরকার মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য৷

তিনি বলেন, দুর্নীতি থাকলেও চীনে বিচার হয়, বাংলাদেশে হয় না৷ চীনে সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা আছে, বাংলাদেশে গত চার দশক ধরে যত সরকার এসেছে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা পায়নি৷ চীনে গণতন্ত্র না থাকলেও তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাদেশের সংস্কৃতির কোনো মিল নেই৷

১০০ বছরের উন্নয়ন চীন ১০ বছরে করেছে এ কথা উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, \’বাজার অর্থনীতি গ্রহণের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে৷ বিশ্বায়নে সবচেয়ে লাভবান হয়েছে চীন৷ আমাদের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ক্ষেত্র প্রায় ১০ গুণ৷ পশ্চিমা দেশ নয়, প্রবৃদ্ধিশীল এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে হবে৷ আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে যদি আমরা উন্নত হতে না পারি তবে হাজার বছরেও আর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না৷ তাই যদি এখনই সুশাসনের সঙ্গে অর্থনীতির যোগসূত্র স্থাপন করতে না পারি তবে সংকট কাটবে না৷

সাংবাদিক গোলাম মর্তোজা বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র না উন্নয়ন এই বিতর্ক সামনে এনেছে৷ চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার বাস্তবতা বাংলাদেশের মতো নয়৷ উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক নীতি, চরিত্র ও বাস্তব চাহিদা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যদি দুর্নীতিযুক্ত হয় তবে সুষম উন্নয়ন কঠিন হয়ে পড়ে৷

সভাপতির ভাষণে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা কোনো অন্ধত্ব নিয়ে এই গোলটেবিল করছি না৷ চীনের সবকিছু অনুসরণযোগ্য না হলেও অর্থনীতির উন্নয়নমূলক দিকগুলো থেকে আমরা শিখতে পারি৷ স্থিতিশীলতা ছাড়া চীনের অগ্রগতি সম্ভব হতো না৷ আমাদের এখানেই বড় সমস্যা৷ আমাদের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর খুব বেশি সময় নেই৷ বিষয়টা সরকার ও বড় দল দু’টির কেউই চিন্তা করছে না৷ তাই আমরা একটা সংকটে আটকে আছি৷ এ সংকট থেকে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করতে চাই আমরা৷ এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন মাহমুদ জামাল কাদেরী৷