bnp_261460_288795

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৪ জুলাই: বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা বিরোধী দলে থাকার জন্য যে আসন দরকার তাও পাবে না।নির্বাচন কমিশনের উন্নয়নের বরাদ্দ প্রত্যাহার বিষয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির এ অভিযোগ করেন।আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। কিন্তু আমরা চাই না আওয়ামী লীগ বিরোধী দল হিসেবে ধ্বংস হয়ে যাক। তবে তারা নিজেদের পথকেই সংকুচিত করছে।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) বর্তমান ও ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না,তারা সেই সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন। তাই ইউএনডিপি গত জাতীয় নির্বাচন ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর এক ধরনের হতাশা হয়ে চলে যাচ্ছেন।এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদসহ সকল কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।

ইফতার পার্টির মতো অরাজনৈতিক সামাজিক কর্মসূচিতে সরকারি দলের সদস্যরা হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মুখপাত্র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, আপনাদের ক্যাডার বাহিনী সামলান। রোজার মাস বলে আমরা আপনাদের এ ক্যাডারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছি না। আমাদের নেতাকর্মীরা আর কতদিন সংযম দেখিয়ে যাবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান।রপন বলেন, সরকারের দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশ থেকে উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্রগুলো তাদের ফান্ড সরিয়ে নিচ্ছে।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিগত সিটি করপোরশন নির্বাচন, উপজেলা,পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও বিগত ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন দেশ-বিদেশে কারও কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এ সব নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন সহযোগী দেশসমূহ সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেছিল। কিন্তু সরকারের আজ্ঞাবহ সেবাদাস নির্বাচন কমিশন তা করেনি। তদন্ত না করে তারা গেজেট প্রকাশ করেছে। কমিশন সরকারের সেবাদাসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ কশিশন দিয়ে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়।তারা সম্পূর্ণভাবে নিজেদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, এ সব কারণে জনগণের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীরাও হতাশ হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের সহযোগিতায় যে ফান্ড তারা দেয় তা সে দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা। সে দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন,বিএনপি দাবি করছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীনসহ সকল কমিশনারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। বিগত ৫জানুয়ারির নির্বাচন সকল গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। ওই নির্বাচন ছিল একটি ঘোষণা দেয়ার নির্বাচন। সে নির্বাচনে সামরিক ফরমানের মতো অনেককে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। তা হয়েছে সেবাদাস সিইসি রকিবউদ্দীন নামের লোকটির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়।

এক প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তাচ্ছিল্য করে বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনীতি লেডিস ক্লাবে ঢুকে গেছে। আমরা নাসিমের এ বক্তব্যর জবাবে বলতে চাই, বিএনপিকে মাঠে নামতে না দিয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছেন। এটা কী আপনাদের ক্রেডিট না ফ্যাসিবাদী আচরণ, তা আপনার কাছেই জানতে চাই।তিনি বলেন, পুলিশের আইজি শহিদুল হক বলেছেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মকাণ্ডের কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা কমছে। একজন উর্দি পরা লোক হয়ে পুলিশের আইজি বুঝতে পারছেন সরকারের জনপ্রিয়তার পারদ ক্রমশ নিচের দিকে নামছে। অথচ আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দলের নেতারা এটা বুঝতে পারছেন না তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। শাসক দল আওয়ামী লীগ নিজেরা নিজেদের রাজনৈতিক বিনাশ ডেকে আনছে, অথচ আমরা তা চাই না।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ তালুকদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।