1432293337

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ মে: বাংলাদেশ সরকার আনসারউল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি জঙ্গী ইসলামী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।এই সংগঠনটির সঙ্গে আল কায়েদা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করে পুলিশ।আনসারউল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করার জন্য গত সপ্তাহেই পুলিশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়।স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসি বাংলাকে জানান, পুলিশের সুপারিশের ভিত্তিতে তারা আনসারউল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই লক্ষ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

পুলিশ বলছে,সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কয়েকজন ব্লগারকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে এই সংগঠনটির সম্পৃক্ততার ব্যপারে তাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।আর সেকারণেই এ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পড্রস্তাব পাঠানো হয়।

একাধিক গোয়েন্দা সূত্র মতে, একের পর এক ব্লগারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে এবিটির ঘুপ্তঘাতক স্লিপার সেলের ভয়ঙ্কর জঙ্গিরা। গ্রেফতার না হওয়ায় তারা ধীরে ধীরে রীতিমতো আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। এর ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন ব্লগার, লেখক, সংস্কৃতিকর্মীসহ প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার মানুষরা। গোয়েন্দা সূত্র মতে, ছোট ছোট গ্র“পে ভাগ হয়ে এ সেলের সদস্যরা ‘কথিত ইমানী’ দায়িত্ব নিয়ে অপরাধ প্রবণতায় জড়িয়ে পড়ছে। এই সেলটির মূল নেতৃত্বে আছেন উগ্রপন্থি যুবক সাবেক ছাত্র শিবির নেতা রেজওয়ানুল আজাদ রানা। উগ্রপন্থি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) এই সেলটি কাট আউট পদ্ধতি চলে। চার থেকে পাঁচজনের একটি গ্রুপের তথ্য আরেকটি গ্র“প জানে না। এ দুর্র্ধষ রানাকে গ্রেফতার করতে পারলেই এসব হত্যার রহস্য, খুনি ও নির্দেশদাতাদের নাম বেরিয়ে আসবে। দীর্ঘদিনেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে রানা বর্তমানে দেশে নেই বলে দাবি পুলিশের।

সূত্র জানায়, সারাদেশে আনসারুল্লাহর এক হাজারের অধিক অনুসারী রয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত তিনশ’ নিয়মিত সদস্য। এরা নানা নেপথ্য চক্রে ভাগ হয়ে তৎপর রয়েছে। এছাড়া আনসারুল্লাহর ‘একাকী মুজাহিদ’ রয়েছে। সূত্র জানায়, আনসারুল্লাহ সিøপার সেলের জঙ্গিরা লোন উলফ্রে বাংলা করেছে ‘একাকী মুজাহিদ’। এই পদ্ধতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণের জন্য একজনকে উদ্বুদ্ধ এবং প্রস্তুত করা হয়। একাকী মুজাহিদ ও ‘স্লিপার সেলের’ জন্য ঘরে বসে ও রান্নাঘরের উপাদান ব্যবহার করে বোমা-বিস্ফোরক তৈরি, লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ ও আক্রমণপূর্ব পর্যবেক্ষণসহ (রেকি) অন্যান্য কলাকৌশল গ্রহণ করে থাকে।এদিকে তালিকামাফিক একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার পরও বর্তমানে এসব জঙ্গি গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশ ও র‌্যাবের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এক সময় র‌্যাব জঙ্গিবিরোধী তীব্র অভিযানে থাকলেও বর্তমানে তাতে অনেকটা ভাটা পড়েছে।

খোদ সরকারি দলের নীতি নির্ধারক, সাবেক মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেন বুধবার এক অনুষ্ঠানে অভিযোগ করে বলেছেন, হয়ত পুলিশ চাইছে না বলেই একের পর এক ব্লগার হত্যায় জড়িত খুনিরা গ্রেফতার হচ্ছে না।জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ও ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, ব্লগারদের হত্যাকারী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গ্রেফতারে পুলিশের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। খুনিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে এবং তদন্তও ঠিকমতোই চলছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন হত্যাসহ ঘটনার দায় স্বীকার করে টুইট বার্তা দিলেও আনসারুল্লাহ গ্র“পর নেতৃত্ব ও অবস্থান সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে অভিজিৎ হত্যায় জড়িত বলে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।