BTRC-Mobile
দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর: অর্থ মন্ত্রণালয়ে দুই দফা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর অবশেষে বিদেশ থেকে আসা টেলিফোন কলের রেট (আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল টার্মিনেশন রেট) অর্ধেক করা হয়েছে। আগে প্রতি কল তিন সেন্টে (দুই টাকা ৩২ পয়সা) আসতো। এখন এই রেট অর্ধেক (দেড় সেন্ট) করা হয়েছে। পাশাপাশি আগে প্রতি কল থেকে সরকার রাজস্ব পেত ৫১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে সরকার পাবে ৪০ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। দৈনিকবার্তা কে সমীর কুমার দে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পত্রিকাটির তথ্য মতে, গতকাল বিটিআরসির সিস্টেম এন্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল মো. জুলফিকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কলরেট কমানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে আসা কলরেট তিন সেন্টের স্থলে দেড় সেন্ট করা হল। পাশাপাশি সরকারের রাজস্বের অংশ ৫১ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। আগের কাঠামো অনুসারে আইজিডব্লিউ’র আনা আয়ের ৫১ দশমিক শতাংশ ৭৫ পেত সরকার। বাকি অর্থের মধ্যে ১৫ শতাংশ পেত আইসিএক্স, ২০ শতাংশ পেত যে মোবাইল বা ল্যান্ডফোনে কলটি যায় তারা এবং ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ পেত আইজিডব্লিউ অপারেটর। নয়া কাঠামোয় প্রাপ্ত রাজস্ব থেকে সরকার ৪০ শতাংশ, আইজিডব্লিউ ২০ শতাংশ, আইসিএক্স ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং যে মোবাইল বা ল্যান্ডফোনে কলটি যায় তারা ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ পাবে।
ইত্তেফাক বলছে, বিদেশি কল আসার ক্ষেত্রে গেটওয়েগুলোর (আইজিডব্লিউ) ট্যারিফ কাঠামো এবং রাজস্ব ভাগাভাগির নিয়ে বিটিআরসি থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রথম দফায় যে প্রস্তাব পাঠানো তাতে বলা হয়েছিল এই ব্যবস্থায় সরকারের রাজস্ব কমবে এক হাজার ৭৩ কোটি টাকা। কিন্তু অভিযোগ করা হয়েছে, পরবর্তীতে বিটিআরসি থেকে পাঠানো দ্বিতীয় প্রস্তাবে ট্যারিফ কাঠামো ও রাজস্ব ভাগাভাগি একই রেখে কিছু ‘ভুল তথ্য’ দিয়ে বলা হয়েছে সরকারের রাজস্ব ২০০ কোটি টাকা বাড়বে। সরকারের রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় অর্থ মন্ত্রণালয় দুই দফাতেই বিটিআরসির প্রস্তাব নাকোচ করে দেয়। সর্বশেষ গতকাল বিটিআরসির প্রস্তাব মেনে নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিটিআরসি এখন বলছে, পরীক্ষামূলক ও অস্থায়ীভাবে ৬ মাসের জন্য এটা কার্যকর করা হয়েছে। কল ভলিউম ও রাজস্ব আয়ের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্যারিফ দেড় সেন্ট করার কারণে এমনিতেই দেশে ডলার অনেক কম আসবে। সেখান থেকে সরকারের আয়ও যাবে কমে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে। এখন এই দেড় হাজার কোটি টাকার দায়িত্ব বিটিআরসিকেই নিতে হবে। তারা বলেন, সরকার যেখানে এই খাত থেকে তাদের আয় বাড়ানোর জন্যে কাজ করছে সেখানে কাদের চাপে বিটিআরসি এমন সিদ্ধান্ত নিল সেটাও বোঝা দরকার। তারা আরো বলছেন, এর আগে ২০০৮ সালে নিলামের মাধ্যমে চারটি আইজিডব্লিউকে লাইসেন্স দেয়া হয়। পরে নীতিমালা বদলে রাজনৈতিক বিবেচনায় আরো ২৫টি লাইসেন্স দেয়া হয়। এতেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা এলোমেলো সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ৬টি আন্তর্জাতিক গেটওয়ে অপারেটরের (আইজিডব্লিউ) কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা প্রায় সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানকে খুঁজেই পাচ্ছে না বিটিআরসি।