রাজধানীর যানজট নিরসনে সার্কুলার রেল চালু করতে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। সোমবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা প্রভাতি এক্সপ্রেসের নতুন কোচ উদ্বোধন করে তিনি এ কথা বলেন।মুজিবুল হক বলেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ট্রেনের ডাবল লাইন করা হবে। অর্থায়ন হলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বুলেট ট্রেন চালু করার পাশাপাশি ঢাকা থেকে বরিশাল, বরিশাল থেকে পায়রা পর্যন্ত এবং আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ করা হবে। রেললাইনে বাঁশ দেয়ার বিষয়টিকে অপপ্রচার উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, বাঁশ যেখানে দেয়া হয়েছে সেটি রেললাইনের অংশ নয়। রেলের কোনো লোড এর ওপর পড়ে না।

ঢাকা-চট্রগ্রাম-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী মহানগর প্রভাতী ও তুর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেন নতুন লাল-সবুজ কোচ নিয়ে আজ থেকে যাত্রা শুরু করছে।রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক সোমবার সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নতুন কোচ সমৃদ্ধ মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি উদ্বোধন করেন এবং রাত সাড়ে ১০টায় তুর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেন উদ্বোধন করবেন।রেলপথমন্ত্রী সকাল সাড়ে ৭টায় নতুন কোচ দ্বারা ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট-চিলাহাটি-ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রুটে চলাচলকারী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করবেন বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শরিফুল আলম জানান, নতুন আমদানী করা ইন্দোনেশিয়ান এমজি কোচ দিয়ে মহানগর প্রভাতী ও ভারতীয় বিজি কোচ দিয়ে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক প্রতিস্তাপিত হয়।মহানগর প্রভাতী ও তুর্ণা এক্সপ্রেস এই দুটি ট্রেনে ১৬টি করে কোচ এবং নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ১২টি নতুন কোচ সংযুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মহানগর প্রভাতী ও তুর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ২টি এসি বার্থ বা স্লিপার ও ১টি নন এসি স্লিপার, ৪টি এসি চেয়ার, ৬টি শোভন চেয়ার, ১টি পাওয়ার কার এবং ২টি গার্ড ব্রেকভেন রয়েছে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ১টি এসি বার্থ বা স্লিপার ও ১টি নন এসি স্লিপার, ১টি এসি চেয়ার, ৬টি শোভন চেয়ার, ১টি পাওয়ার কার এবং ২টি গার্ড ব্রেকভেন রয়েছে।রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, বর্তমান সরকার রেল যাত্রীদের আরামদায়ক যাত্রার বিষয়টি মাথায় রেখে ট্রেনে নতুন নতুন কোচ সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে।তিনি বলেন, রেলওয়েতে বর্তমান সরকার ৪৯টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়, যার বেশ কয়েকটি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সবক’টি প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে রেলওয়েতে আমূল পরিবর্তন আসবে। বর্তমান সরকারের আমলে নতুন করে আরও প্রায় ৮শ’ যাত্রীবাহী কোচ কেনা হবে। নতুন কোচগুলো এলে নতুন ট্রেন চালানোসহ চলমান পুরাতন কোচগুলো বদলে ফেলা হবে।

তিনি বলেন, নতুন করে যত কোচ, ইঞ্জিন কেনা হবে সবক’টি কোচ-ইঞ্জিনই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজ রঙের হবে।মন্ত্রী বলেন, যেসব ট্রেনের পুরাতন, মেয়াদোত্তীর্ণ বগি বদলিয়ে নতুন বগি লাগানো হচ্ছে সেসব ট্রেনের গতি আরও বাড়ছে। বাড়ছে যাত্রী সেবাও। নতুন বগি, এগুলোর সিট, দরজা, জানালা ও টয়লেটগুলো কিছুটা চওড়া। যাত্রীদের সুবিধার্থে জানালার গ্লাসগুলো অত্যাধুনিক মানের করা হয়েছে।১৯৭২ সালের পর থেকেই কম বগি বা কোচ নিয়ে রেলওয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এ অবস্থায় ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ ২০টি নতুন বগি আনা হয়। গত ২০ বছরে নতুন করে রেলওয়ে কোন বগি আনতে পারেনি।মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালের রেলওয়েতে ১ হাজার ২৪৭টি যাত্রীবাহী কোচ ছিল। ৪৪ বছরে কোচ বেড়েছে মাত্র ২৪৩টি। একই সময়ে যাত্রী পরিবহন প্রায় সাতগুণ উন্নীত হলেও এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কোচ কিংবা ইঞ্জিন বাড়ানো হয়নি। পুরনো কোচগুলোর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশের স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে গেছে।