বেসরকারিখাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৫৬ জনের মাঝে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি (শিল্প)-২০১৫ কার্ড’ বিতরণ করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্ড বিতরণ করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জন্য পাঁচ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত ৪৯ জন এবং পদাধিকার বলে ০৭ জন শিল্প উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠান সিআইপি (শিল্প) পরিচয়পত্র পেয়েছেন। এদের বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ২৫ জন, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ১৫ জন, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ০৫ জন, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ০২ জন, কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ০২ জন রয়েছেন। এ উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে সিআইপি (শিল্প) কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুষেণ চন্দ্র দাস, সিআইপি (শিল্প) কার্ডপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা রূপালী হক চৌধুরী এবং মোঃ আবদুর রাজ্জাক বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, সিআইপি (শিল্প) পরিচয়পত্রধারীদের অনুকূলে সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আজ থেকে আগামী এক বছরের জন্য বহাল থাকবে। এটি বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হবে। কার্ডধারীরা বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। তাঁদের ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের সময় বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার থাকবে। ব্যবসার কাজে বিদেশ ভ্রমনের ক্ষেত্রে ভিসা প্রাপ্তির জন্য তাঁদের অনুকূলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে ‘লেটার অব ইনট্রুডাকশন’ দেয়া হবে। তাঁদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের কেবিন সুবিধার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার থাকবে। কার্ডধারীরা বিমান বন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধাও পাবেন। অনুষ্ঠানে আমির হোসেন আমু বলেন, বর্তমান সরকার দেশে বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন কার্যক্রম জোরদারের ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। টেকসই বেসরকারিখাতের বিকাশে জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬ প্রণয়নের পাশাপাশি শিল্প প্লট বরাদ্দ নীতিমালা-২০১০, লবণনীতি-২০১১, রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রদান নির্দেশনাবলী-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আলোকে ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ও রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ দূষণ থেকে রাজধানীবাসীকে সুরক্ষায় সরকার সাভারে আধুনিক চামড়া শিল্পনগরি গড়ে তুলছে। এ মাসের মধ্যেই হাজারীবাগ থেকে সকল কাঁচা চামড়া কারখানা সরিয়ে দেয়া হবে। পাশাপাশি বিসিকের মাধ্যমে রাসায়নিক, প্লাস্টিক এবং হালকা প্রকৌশল শিল্পের জন্য পৃথক শিল্পনগরি গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান। সিআইপি (শিল্প) হিসেবে নির্বাচিত উদ্যোক্তারা শিল্পসমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে নতুন উদ্যেমে নিজেকে সম্পৃক্ত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।