দৈনিকবার্তা_DoinikBarta_Emajuddin_thereport24

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩১ মার্চ: সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের নিশ্চিন্তে ভোট প্রয়োগ এবং প্রার্থীদের প্রচারণা নির্বিঘ্ন করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ৷ মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে এজন্য আপনারা (নির্বাচন কমিশন) সমাজের কাছে দায়ী থাকবেন৷ ভবিষ্যতে এর মূল্য দিতে হবে৷  নির্বাচন কমিশনের কাছে তার দেওয়া প্রস্তাবগুলো পূনবর্্যক্ত করে ৷  মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্রের সংকট ও উত্তরণের পথ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন৷ ফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রকৌশলী পুলক কান্তির সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লে. জে.(অব.) মাহবুবুর রহমান৷এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, পরিবেশ তৈরি করতে কি করতে হবে সেই বিষয়গুলো কমিশনের কাছে বলেছিলাম৷ আল্লাহরওয়াস্তে এই কাজগুলো করুন৷ প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন আর ভোটার নিশ্চিন্তে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন৷

গত ২৫ মার্চ তার (এমাজউদ্দীন আহমেদ) নেতৃত্বে ‘শত নাগরিক কমিটি’র একটি প্রতিনিধি দলটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানোসহ ছয়টি অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷তাদের অন্য চাওয়াগুলো ছিলো- গ্রেফতার ও হয়রানিতে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কাজ বাধাহীন করা, কারাবন্দিদের প্রচার কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত, বিরোধী দল সমর্থিতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ ঠেকানো, অস্ত্র ও পেশি শক্তি নিয়ন্ত্রণ, প্রচারকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত৷

এমাজউদ্দীন বলেন, নির্বাচনের আগে বৃহত্তর বা ক্ষুদ্রতর পর্যায়ে মিছিল, মিটিং ও সমাবেশের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে৷ এগুলো নির্বাচনের অনুষঙ্গ৷ এর মাধ্যমে প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যান৷ এইসব বিষয় নিশ্চিত করা না গেলে তারা কিভাবে ভোট চাইবেন?বর্তমানে হিটলারী কায়দায় দেশ চালানো হচ্ছে দাবি করে বিএনপিপন্থি পেশাজীবি হিসেবে পরিচিত এই শিক্ষক বলেন, ক্ষমতা চিরদিন থাকেনা৷ হিটলারও কিছুদিন এই ক্ষমতায় ছিলেন৷ কিন্তু এরপর তাকে আর পাওয়া যায়নি৷ আশা করি, ক্ষমতাসীনদের এ বিষয়ে শুভবুদ্ধির উদয় হবে৷ কারন জোর করে ক্ষমতায় থাকার পরিণতি ভালো হয়না৷

গুম, খুন ও অপহরণই বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য কাজ হিসেবে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ৷বর্তমান সমাজকে গণতান্ত্রিক সমাজ বলা যায় না বলে মন্তব্য করে ড. এমাজউদ্দীন বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে কোন দলের অফিস তালাবদ্ধ থাকতে পারে না৷ এটা ফ্যাসিবাদী সমাজের কার্যক্রম৷ আর সে কার্যক্রম এই সরকারের আমলে প্রতি মূহুর্তে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ আজকে তারা যেভাবে গণতন্ত্রের কথা বলে চিত্‍কার করছে তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন এটাই কি তাদের গণতন্ত্র?  সিটি নির্বাচন সম্পর্কে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনারকে বলেছিলাম আল্লাহর ওয়াস্তে কয়েকটি কাজ করবেন জনগণ যাতে তাদের পছন্দ মত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে৷ প্রার্থীগণ যাতে জনগণের সাথে হাত মেলাতে পারে৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এখন পযনর্্ত তাদেরকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখিনি৷ মিছিল মিটিং সমাবেশ ছাড়া প্রার্থী কখনো স্বাধীনভাবে প্রচারণা চালাতে পারে না৷

বর্তমান নির্বাচন কমিশনারকে দক্ষ আখ্যা দিয়ে এমাজউদ্দীন বলেন, ৫ জানুয়ারি কেমন নির্বাচন হয়েছিলো বাংলাদেশের জনগণ তা জানে৷ সেই নির্বাচনে কেউ বলে ৪ ভাগ কেউ বলে ২০ ভাগ কিন্তু এই নির্বাচন কমিশনার তা টেনে নিয়ে বলেন ৪০ ভাগ ভোট পড়েছে নিশ্চয় তারা অনেক দক্ষ৷ তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাছে আমার প্রশ্ন বাকি ৬০ ভাগ ভোট কোথায় গেলো?  আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক প্রকেীশলী পুলক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী নিতাই রায় চেীধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. দিলীপ বড়ুয়া, আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক বাবু সুশিল বড়ুয়া, প্রকেীশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের সভাপতি শামা ওবায়েদ, বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ৷