একদিন বাকী রেখেই নিউজিল্যান্ডের কাছে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ৯ উইকেটে হারলো বাংলাদেশ। ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলো কিউইরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৮৯ রানের জবাবে ৩৫৪ রান করে নিউজিল্যান্ড। ৬৫ রানে পিছিয়ে থেকে এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিততে নিউজিল্যান্ডের সামনে টার্গেট দাড়ায় ১০৯ রান। সেই লক্ষ্যে ১ উইকেট হারিয়ে ১১১ রান তুলে ম্যাচ ও সিরিজ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড। সিরিজের প্রথম টেস্ট ৭ উইকেটে জিতেছিলো কিউইরা।

৭ উইকেটে ২৬০ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিলো নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টির কারনে তৃতীয় দিন খেলাই হয়নি ক্রাইস্টচার্চে। তবে চতুর্থ দিন খেলা হয়েছে। ৫৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দিয়েছেন হেনরি নিকোলস। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিকোলসকে ৯৮ রানেই থামিয়ে দেন বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তার ফিরে যাবার ১১ রান পরই ৩৫৪ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের সাকিব ৪টি, রাব্বি ও মিরাজ ২টি করে এবং তাসকিন ১টি উইকেট নেন।নিকোলসের ১৪৯ বলের ইনিংসে ১২টি বাউন্ডারি ছিলো। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের শেষদিকে টিম সাউদি ১৭ ও নিল ওয়াগনার ২৬ রান করেন। এতে প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানের লিড পায় ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। ফলে পিছিয়ে থেকেই দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। দলীয় ১৭ রানেই ওপেনার ও অধিনায়ক তামিম ইকবাল ফিরে যান। মাত্র ৮ রান করেন তিনি।

এরপর ৪১ রানে জুটি গড়ে পরি¯ি’তি সামাল দিয়েছিলেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যক্তিগত ৩৬ রানে সৌম্য ফিরে গেলে, ভেঙ্গে যায় জুটি। এরপর সাকিবকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে মনোযোগি হন মাহমুদুল্লাহ। কিš‘ খুব বেশি দূর এগোতে পারেননি তারা। ১৫ রানের জুটিতে ৮ রান করে ফিরে যান সাকিব।তার বিদায়ে ক্রিজে মাহমুদুল্লাহর সঙ্গী হন নাজমুল হোসেন শান্ত। বেশ সর্তকতার সাথেই খেলতে থাকেন তারা। ফলে এই জুটিতে রান উঠে ১০ ওভারে ১৯ রান। এখানে মাহমুদুল্লাহর অবদান ছিলো ১৭ রান। তবে ৩৮ রানের থেমে যেতে হয় তাকে। এতে ৯২ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশ ইনিংসে ধস নামে। পরের ২৩ রানে আরও ৪ উইকেট হারিয়ে ৮ উইকেটে ১১৫ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তাই দ্রুতই দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে নেয়ার শংকায় পড়ে টাইগাররা।
কিন্তু সেটি হতে দেননি দুই বোলার তাসকিন আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি। মারমুখী মেজাজে ব্যাট চালিয়ে নিউজিল্যান্ড বোলারদের মাথা গরম করে দেন তারা। সেই সুযোগে জুটিতে অর্ধশতও করে ফেলেন তাসকিন-রাব্বি। এরপরই তাসকিনের উইকেট তুলে নিয়ে নবম উইকেটের জুটি ভাঙ্গেন নিউজিল্যান্ড পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। ২টি ছয় ও ১টি চারে ৩০ বলে ৩৩ রান করেন তাসকিন। রাব্বির সাথে তাসকিনের জুটি ছিলো ৪৮ বলে ৫১ রানের। দলীয় ১৬৬ রানে তাসকিনের ফিরে যাবার ৭ রান পরই, অর্থাৎ ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৯ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন রাব্বি। ব্যক্তিগত ৭ রানে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরেন পেসার রুবেল হোসেন।

বাংলাদেশ গুটিয়ে যাওয়ায় নিউজিল্যান্ডের সামনে ম্যাচ জয়ের জন্য টার্গেট দাড়ায় ১০৯ রান। আর সেটি তারা টপকে গেছে ১ উইকেট হারিয়ে ও ১১২ বল খরচ করে। নিউজিল্যান্ডের জিত রাভাল ৩৩ রানে ফিরলেও, টম লাথাম ৪১ ও কলিন গ্র্যান্ডহোম ৩৩ রানে অপরাজিত থেকে স্বাগতিকদের ম্যাচ ও সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি।নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ১৩টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে ১০টি জয় পায় নিউজিল্যান্ড। আর ৩টি ম্যাচ হয় ড্র। চলমান নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টুয়েন্টি টুয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো বাংলাদেশ।