Powerful Earthquake in Italy Kills at Least 247 and Shatters Townsইতালির ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ জনে। অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে। বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ৩৬ মিনিটে ৬.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। মধ্য ইতালির পাহাড়ি এলাকায় ছিল ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র। ওই অঞ্চলে ভূমিকম্পের আঘাত ছিল সবচেয়ে বেশি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৬.২ মাত্রার ওই ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল রোমের উত্তর-পূর্বের রেইতি নামক একটি স্থান। এটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূমির ১০ কিলোমিটার গভীরে। ওই ভূমিকম্পটির পর বেশ কয়েকটি নিম্নমাত্রার ‘আফটার শক’ অনুভূত হয়েছে। ৬.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর থেমে থেমে অনুভূত হওয়া আফটার শকে বারবার কেঁপে উঠে ইতালি। সবচেয়ে তীব্র আফটার শকের মাত্রা ছিল ৫.৫।

ভূমিকম্পে ইতালির আমাত্রিস শহরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি কার্যত ধ্বংসস্তূপের শহরে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, অন্তত ২৪৭ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা গেছে। আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই সাবধানতার সঙ্গে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। রোমের উত্তর-পূর্বের শহর আমাত্রিসের মেয়র সার্জিও পেরোজ্জি জানান, ‘অর্ধেক শহরটাই নাই হয়ে গেছে।’ অমূল্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

সার্জিও পেরোজ্জি জানিয়েছেন, ‘শহরের অনেক অট্টালিকা মাটিতে গুড়িয়ে গেছে। অনেক গ্রাম গায়েব হয়ে গেছে। অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শনও ধ্বংস হয়ে গেছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ ধসে পড়ায় জরুরি উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানান তিনি। খুবই কষ্টকর উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।’

সারজিও পিরোজ্জি বলেন, ‘শহর থেকে বের হওয়ার এবং প্রবেশের সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের অর্ধেকই নাই হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শহরের চারিদিকে মরদেহ ছড়িয়ে আছে। ধ্বংস্তুপের নিচে মানুষ চাপা পড়েছে। ভূমিধস হয়েছে। একটি সেতুও বোধহয় ভেঙে পড়েছে।’

ভূমিকম্পটির যেখানে উৎপত্তি হয়েছে সেখান থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে হওয়ার পরও তা ইতালির রোম শহরেও অনুভূত হয়েছে। আমাত্রিস ছাড়াও আকুমোলি, পোস্তা ও আরকোয়াতা দেল ত্রন্তো শহরেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।আকুমোলির মেয়র স্তেফানো পেত্রোচ্চি ভূমিকম্পের ভয়াবহতায় কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘এই অবস্থা আমাদের চিন্তার চেয়েও ভয়াবহ। বাড়ি-ঘর ধসে পড়েছে, মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েছেন। প্রাণের ধ্বনি যেন থেমে গেছে।’

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি সর্বাত্মক উদ্ধার তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে তিনি স্বেচ্ছাসেবক ও জনপ্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন যারা মধ্যরাতে খালি হাতে আটকে পড়াদের উদ্ধার কাজ শুরু করেছিলেন।ইতালির দমকল বিভাগের প্রধান লুসা কারি জানান, উদ্ধার তৎপরতা চালাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চারটি এলাকায় হেলিকপ্টার পাঠানো হচ্ছে।