গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) ভিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মো. মাহবুবর রহমানকে দ্বিতীয় দফা মেয়াদ না বাড়িয়ে নতুন ভিসি নিয়োগের দাবীতে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের শিক্ষকরা সংবাদ সম্মেলন, মানবন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এসময় তারা ভিসি প্রফেসর ড. মো. মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা এবং স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ তুলে বক্তব্য রাখেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে রবিবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান আকন্দ। অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইমরুল কায়েস, সহকারি অধ্যাপক আরিফুর রহমান খান, সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম খান প্রমূখ।

বক্তরা বলেন, ২০১৩ সালের ২০মার্চ চার বছর মেয়াদে প্রফেসর ড. মো. মাহবুবর রহমান ভিসির দায়িত্ব পান। ২০১৭ সালের ১৯মার্চ তার ওই মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে পূণঃনিয়োগ পাওয়ার তদবির শুরু করেছেন। তিনি আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। তিনি ক্ষমতার উন্মদনায় ভুগেন। তার সময়ে স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গবেষণার মান নি¤œগামী হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা ব্যবস্থা নি¤œমান ও ঝুকিপূর্ণ হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে বিএনপি ও জামায়াতীকরন করেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী যোগ্য শিক্ষক থাকা স্বত্ত্বেও পছন্দের ব্যক্তিকে একাধিক দায়িত্ব দেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে (ভিসি কার্যালয়ের সামনে) মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, দাবি মানা না হলে লাগাতার কর্মবিরতিসহ বৃহত্তর আন্দেলনের কর্মসূচী দেয়া হবে। এসময় তারা বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমানের মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় না বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান। তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগ্য শিক্ষককে ভিসি পদে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।

এসময় আন্দোলনরতরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া, ছাত্রকল্যান পরিচালক অধ্যাপক মোফাজ্জল হোসেন এবং অধ্যাপক এ আর এম সোলাইমানসহ ৫ জন শিক্ষক তাদের বায়োডাটা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি এদের মধ্য থেকেই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হউক।

এদিকে ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবর রহমান তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, ভিসি পদে নিয়োগ পেতে কয়েক শিক্ষক গুটিকয়েক অনুসারী নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বর্তমান ভিসির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা মিথ্যা ও আজগুবি নানা অভিযোগ তুলে বিভিন্ন মহলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বর্তমান সময়ে প্রতিষ্ঠানটি শান্তিপূর্ণভাবে ও আন্দোলন বিহীন ভাবে চলেছে। সাবেক ভিসি আব্দুল মান্নান আকন্দের নেতৃত্বে একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। ভিসি পদে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে এটা সরকার নির্ধারণ করবেন। নিশ্চয়ই যোগ্য লোককে ভিসি পদে নিয়োগ দেয়া হবে। অথচ তারা সুষ্ঠু পরিবেশকে ঘোলাটে করতে ভিসির বর্তমান মেয়াদের শেষ দিনে হঠাৎ এসব কর্মকান্ড করতে চাচ্ছে। এসব কর্মকান্ডের প্রতি বিশ^বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর সমর্থন নেই।