নাহ্! প্রতিদিন অলৌকিক কিছু ঘটে না। প্রতিটি দলই পিএসজির মতো ভুল করে না। মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা প্রতিদিনই আসুরিক শক্তিতে জ্বলে উঠতে পারেন না, যেমনটি তাঁরা পিএসজি ম্যাচে জ্বলে উঠেছিলেন। ইতিহাসও প্রতিদিন গড়া যায় না। যায় না বলেই চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার বিদায় ঘটে গেল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। এক সপ্তাহ আগে তুরিনে জুভেন্টাসের কাছে ৩-০ গোলে হেরেই বার্সেলোনার বিদায়ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছিল। বাকি ছিল কেবল দ্বিতীয় লেগের আনুষ্ঠানিকতা। অলৌকিক কিছুর অপেক্ষা। আজ ন্যু ক্যাম্পে সেই আনুষ্ঠানিকতা, সেই অপেক্ষার শেষ হলো। জুভেন্টাস উঠে গেল শেষ চারে। ম্যাচের স্কোরলাইন ০-০ হওয়ায় ৩-০ গোলের ব্যবধানেই বার্সাকে টপকে ইউরোপসেরা হওয়ার লড়াইয়ে শেষ চারে জুভেন্টাস।

বার্সেলোনাকে ম্যাচটি জিততে হতো ৪ গোলের ব্যবধানে। এটিই ছিল সেই বহু আলোচিত অলৌকিকতা। পিএসজির সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম লেগে ৪-০ গোলে হারলেও দ্বিতীয় লেগে ৬-১ গোলে জিতে মেসিরা অলৌকিকভাবেই শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছিল। পিএসজি সেদিন যে ভুলগুলো করেছিল, আজ জুভেন্টাস সেই ভুলগুলো এড়িয়েই করল বাজিমাত।ম্যাচটা দুর্দান্তই খেলেছে বার্সা। আক্রমণের পর আক্রমণ করে জুভেন্টাসের রক্ষণভাগকে ব্যতিব্যস্তই রেখেছিল তারা। কিন্তু জর্জো কিয়েলিনি, দানি আলভেস, লিওনার্দো বনুচ্চিদের নিয়ে গড়া জুভেন্টাসের রক্ষণ চাপটা সামলেছে বেশ ভালোভাবেই। গোলের সুযোগ যে আসেনি, সেটি বলা অন্যায় হবে। সুযোগ এসেছিল। বেশ কয়েকটি সুযোগই এসেছিল কিন্তু মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ-ইনিয়েস্তারা সে সুযোগগুলো যে কাজে লাগাতে পারেননি। ১৭ মিনিটে মেসির লম্বা থ্রুতে জরদি আলবা যদি পা ছোঁয়াতে পারতেন! ১৯ মিনিটে মেসির শট যদি অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে না যেত! ৬৬ মিনিটে মেসিই তো কত সহজ সুযোগটা হাতছাড়া করলেন! সার্জি রাবার্তো গোল মিস করলেন। দারুণ জায়গা থেকে পাওয়া দুটি ফ্রি কিক মেসি যদি লক্ষ্যে রাখতে পারতেন! এ সবের কিছুই হয়নি। নিজেদের রক্ষণে জুভেন্টাস যেন বাধার দেয়াল তৈরি করে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত লড়াই করেও তাই লুইস এনরিকের দলের বিদায় হয়ে গেল চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই।বার্সেলোনা আজ গোটা ম্যাচে গোলে শট নিয়েছে ১৯টি। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে মাত্র একটি। জুভেন্টাসের সাফল্য ছিল তারা বার্সেলোনাকে জায়গা করে দেয়নি। বার্সেলোনার প্রতিটি গোলের প্রচেষ্টাই ছিল কিছুটা দুরূহ কোণ থেকে। এই ম্যাচের আগে ন্যু ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ৪ ম্যাচে বার্সেলোনার গোল সংখ্যা ছিল ২১টি। জুভেন্টাসের রক্ষণের শক্তিটা বোঝা যাবে এখানেই। কিয়েলিনি কিংবা বনুচ্চিÑদুজনেই দুর্দান্ত ছিলেন আজ। কিন্তু গোটা দলটাকেই একটা দেয়ালের সঙ্গে তুলনা করা যেতেই পারে। বার্সেলোনা তাদের সর্বস্ব দিয়েই আক্রমণে ঝাঁপিয়েছে। কিন্তু মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের আক্রমণভাগের বিপক্ষে দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১৮০ মিনিট গোল না-খাওয়া জুভেন্টাস সেমিফাইনালে খেলছে নিজেদের শক্তিমত্তা সবাইকে জানিয়েই। গত ৫০টি ম্যাচে এটি বার্সেলোনার প্রথম গোলশূন্য ড্র।