হায়দারাবাদ টেস্ট জিততে হলে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ৪৫৯ রানের জবাবে চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০৩ রান তুলেছে টাইগাররা। ফলে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে বাকী ৭ উইকেটে আরও ৩৫৬ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। আর তা করতে পারলেই চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে ৪১৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালে সেন্ট জোন্স-এ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টার্গেট ৪১৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়ে ক্যারিবীয়রা।

ভারতের বিপক্ষে হায়দারাবাদ টেস্ট জিততে হলে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ৩৫৬ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। ভারতের ছুঁড়ে দেয়া ৪৫৯ রানের টার্গেটে চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০৩ রান করেছে টাইগাররা। এর আগে প্রথম ইনিংসে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের অসাধারন সেঞ্চুরিতে ৩৮৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হবার আগে টাইগার দলপতি মুশফিকুর করেন ১২৭ রান।প্রথম ইনিংসে ভারতের ৬৮৭ রানের জবাবে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ৩২২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ৮১ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন। তবে চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারেই ফিরে যান মিরাজ। কোন রান যোগ না করেই ভারতের পেসার ভুবেনশ্বর কুমারের বলে বোল্ড হন তিনি।মিরাজের পর উইকেটে আসেন তাইজুল ইসলাম। মুশফিকুরকে খুব বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি তাইজুল। ব্যক্তিগত ১০ রানেই থেমে যান তিনি। তবে অধিনায়ককে দীর্ঘক্ষণ সঙ্গ দিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। এতে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম ও ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ পেতে কোন সমস্যা হয়নি মুশফিকের।
তিন অংকে পা দিয়েও, রান তোলার কাজটা ভালোভাবেই ধরে রেখেছিলেন মুশফিক। তবে শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানেই থেমে যেতে হয় মুশিকে। তার ২৬২ বলের নান্দনিক ইনিংসে ১৬টি চার ও ২টি ছক্কা ছিলো। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর আউট হলে ৩৮৮ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। আর মুশিকে শিকার করে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্রুত ২৫০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন ভারতের অফ-স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। এই ইনিংসে ভারতের সেরা বোলার পেসার উমেশ যাদব নেন ৩ উইকেট।

৩৮৮ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় ফলো-অনে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশকে ফলো-অন না করিয়ে, দ্বিতীয় ইনিংসে আবারো ব্যাটিং-এ নামে ভারত। ২৯ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৯ রান করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা দেয় তারা। ফলে ম্যাচ জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪৫৯ রান। এই ইনিংসে ভারতের পক্ষে চেতেশ্বর পূজারা অপরাজিত ৫৪, বিরাট কোহলি ৩৮, আজিঙ্কা রাহানে ২৮ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন ও সাকিব।জয়ের জন্য ৪৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ১১ রানেই ওপেনার তামিম ইকবালকে হারায় বাংলাদেশ। মাত্র ৩ রান করে অশ্বিনের শিকার হন তামিম। এরপর ৬০ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোমিনুল হক। তবে দলীয় ৭১ রানে সৌম্যকে শিকার করে এই জুটি ভাঙ্গেন স্বাগতিক দলের অফ-স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা। ৬৬ বলে ৪২ রান করেন সৌম্য।
সৌম্যর বিদায়ের ৪ রান পরই থামতে হয় মোমিনুলকে। ২৭ রান করে অশ্বিনের দ্বিতীয় শিকার হন মোমিনুল। ৭৫ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে দিনের বাকী সময়টা ভালোভাবেই পার করিয়ে দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসান। দিন শেষে মাহমুদুল্লাহ ৯ ও সাকিব ২১ রানে অপরাজিত আছেন।