ডলারের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে বলে মনে করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, তবে কারা এর পেছনে আছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। রমজানের আগে ডলারের দাম বৃদ্ধি ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, এই সময়ে ডলারের দাম বাড়লে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এবং নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।

সচিবালয়ে অ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ত্রান ভান খোয়ার সঙ্গে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তোফায়েল আহমেদ অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার উদ্যোগের কথাও জানান সাংবাদিকদের। মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলারের রিজার্ভ আছে। প্রয়োজনে সেখান থেকে ব্যবহার করব। কারণ, এই মুহূর্তে উদ্যোগ না নিলে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়বে বাজারে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছেন উল্লেখ করে সাংবাদিকদের জানান, গভর্নর এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ডলারের দাম এরই মধ্যে ৮৪ থেকে ৮২ টাকায় নেমে এসেছে এবং আশা করছি ৮০ টাকার নিচে নেমে আসবে। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এটা স্পষ্ট করেছেন। কওমি মাদ্রাসার ১৫ লাখ ছাত্রের স্বীকৃতির বিষয়টি এত দিন ঝুলে ছিল। প্রধানমন্ত্রী তা নিষ্পত্তি করেছেন। তার মানে এই নয় যে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস বা জোট হয়ে গেল। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে, নিজের এমন বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির অভ্যাস হচ্ছে অহেতুক অভিযোগ করা। বিএনপি সকালে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে, বিকেলে দেখা যায় তাদের দল ও প্রার্থীই বিজয়ী হয়েছে। দলটিকে মিথ্যাচারের অভ্যাস পরিহারের আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মে মাসে রোজা শুরু হয়ে যাবে। আমার মনে হয় এটা (ডলারের দাম বৃদ্ধি) একটা কারসাজি। হঠাৎ ডলারের মূল্য…..।এই বছরের শুরু থেকে ডলারের দাম বাড়ছে। কয়েক মাসের ব্যবধানে তা তিন থেকে চার টাকা বেড়ে ৮৪ টাকা ছাড়িয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এবার এপ্রিলে ডলারের দর প্রায় ২ শতাংশ বেশি।ডলারের দামের এই বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমদানি বেড়ে যাওয়াকে দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।রমজানের আগে ডলারের দাম বৃদ্ধিতে আমদানি করা পণ্য বিশেষ করে খেজুর, তেল, ডালের মূল্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডলারের দর কমাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী তোফায়েল আশা প্রকাশ করেছেন, দর আবার ৮০ টাকার নিচে নামবে।

ডলারের দাম বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করেছি। যে কারণে বেড়েছে, সেটাকে সমাধান করার পদক্ষেপ নিয়েছি।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে গত দুই দিনে দুই বার কথা বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি (গভর্নর) পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরই মধ্যে দাম ৮৪ টাকা থেকে কমে ৮২ টাকা হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য ব্যাংকগুলোকে ডলার দিচ্ছে, যার কারণে কমে যাচ্ছে। আশা করি, আরও কমবে। রিজার্ভ আমাদের ৩২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সেখানে আমরা যদি ২০০ মিলিয়ন ডলার বা ৪০০-৫০০ মিলিয়ন ডলার ব্যাংকে দিয়ে দেই, তাতে আমাদের কোনো ক্ষতি নেই। রোজায় ভোজ্য তেলসহ আমদানি করা পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ডলারের দাম কমানোর পক্ষপাতি বাণিজ্যমন্ত্রী। রোজায় পণ্যমূল্য যেন স্বাভাবিক থাকে, সেজন্য ৩০ এপ্রিল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি।আগের রোজার মাসগুলোতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যেমন ছিল, এবারও তেমন থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তোফায়েল।