হজ এজেন্সিস অ্যসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুল জলিল ও হজ পরিচালক (আশকোনা) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালের অপসারণের দাবি জানিয়েছে হজ এজেন্সিস অ্যসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।অন্যথায় হজযাত্রীদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দালন গড়ে তোলা হবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।শনিবার নয়াপল্টনে হোটেল ভিক্টোরিতে হাব নির্বাহী কমিটির জরুরি সভা এবং সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান হাব সভাপতি ইব্রাহিম বাহার এবং মহাসচিব শেখ মো. আব্দুল্লাহ।হাবের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে সভাপতি ইব্রাহিম বাহার এবং মহাসচিব শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, সরকারি কোটার বরাদ্দ পাওয়া ৪ হাজার ৮শ’সহ ৮ হাজার হজযাত্রীর মোয়েল্লম ফি এখনও আইবিএএন-এর মাধ্যমে সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে না পৌঁছায় ভিসা করতে পারছি না, বারকোড পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে আমরা বাড়িভাড়া করতে পারছি না। আর রিপ্লেসমেন্ট না করায় আটকে আছে আরো চার থেকে পাঁচ হাজার। এসব জটিলতায় সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজারের মতো হজযাত্রী আটকে আছে।এ বছর এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন বাংলাদেশি হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এবং হজ পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে হাব সভাপতি ও মহাসচিব বলেন, হজ পরিচালক ঐদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন।তার অফিসে যেতে ৫০ বার পুলিশকে অনুরোধ করতে হয়। উনি দিনে ফাইল সই করেন না, রাতে ফাইল সই করেন। সচিব এবং হজ পরিচালক ধীর চলো নীতি গ্রহণ করেছেন। জটিলতা সৃষ্টির জন্য সচিব এবং হজ পরিচালকের সেচ্ছাচারিতাকে দায়ি করেন হাবের এই দুই নেতা। হাবের দাবি ৪ থেকে ৫ হাজার হজযাত্রীর সঙ্গে আরো ১৫ থেকে ২০ হাজার হজযাত্রী রয়েছে যারা তিন মোয়াল্লেম বাধ্যবাধকতার কারণে আলাদাভাবে যাচ্ছেন না। যাতে করে বিমানের ১৩টি এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের দুইটি ফ্লাই বাতিল হচ্ছে।সংবাদ সম্মেলনে হাব নেতাদের পক্ষে বলা হয়, ৪ থেকে ৫ হাজার হজযাত্রীর জন্য ইতোমধ্যে বাড়িভাড়া সম্পন্ন হয়েছে। এসব হজযাত্রীরা হজে যেতে না পারলে এজেন্সিগুলো কোটি কোটি টাকা ক্ষতির শিকার হবে।

হাব নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সিটি চেক-ইন নিয়ে অনৈতিকভাবে মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ২৫০ টাকা করে কেটে নিচ্ছেন। এটি ৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র। সৌদি এয়ার লাইন্স সিটি চেক-ইন করাবে না বলে মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে। বিমানের ক্ষেত্রে এটি করা হচ্ছে অন্যয়ভাবে।এসব দাবি করে আল্টিমেটাম দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ইব্রাহিম বাহার এবং শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এবং হজ পরিচালককে (আশকোনা) অপসারণ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।কবে থেকে আন্দোলন শুরু হবে জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পর হজ ও ওমরা এজেন্সিস ওয়েলফোর অ্যাসোয়িয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নাসের বলেন, হাব নেতাদের এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিজের স্বার্থেই তারা সচিব মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করছেন। জটিলতা সৃষ্টি করছেন সুবিধা আদায় করতে।হজযাত্রী পাঠাতে জটিলতা সৃষ্টি হলে তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে বহন করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।শুক্রবার রাতে মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৬ সালের হজ গমনেচ্ছুদের জানানো যাচ্ছে যে, ভিসাপ্রাপ্ত হজযাত্রীদের তালিকা ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিগুলোকে অনতিবিলম্বে বিমানের টিকিট সংগ্রহ করে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হল।নির্দেশনা জারির কারণ হিসেবে জানা যায়, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়া প্রথম ফ্লাইট গত ৪ আগস্ট শুরু হয়েছে। ফ্লাইট শেষ হবে ৫ সেপ্টেম্বর।কিন্তু হজ এজেন্সিগুলো টিকিট সংগ্রহে বিলম্ব করায় বিমান বাংলাদেশ এয়াররাইন্সের অনেক হজ ফ্লাইট খালি যাচ্ছে। এ অবস্থায় সৌদি আরবে হজযাত্রী পাঠাতে শেষের দিকে বিপর্যয়ের আশংকা করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।এ পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিমানের টিকিট সংগ্রহে বিলম্বের কারণে হজযাত্রী পাঠাতে জটিলতা সৃষ্টি হলে তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সিকে বহন করতে হবে।এদিকে সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১০ সেপ্টেম্বর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হজ করতে সৌদি যাওয়ার কথা রয়েছে।