শুষ্ক মৌসুমের শুরুতই ঠাকুরগাঁওয়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদী ও খাল-বিলগুলোতে চরম নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে আগামী বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই এসব নদ-নদীর পানি শুকিয়ে আসতে পারেপানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এসব নদী মাঝে-মধ্যে খনন করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই তা আগের অবস্থায় ফিরে আসে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র মতে, পাথরাজ, নাগর, টাঙ্গন, ভূল্লী, ছোট টেপা, আমন-দামন, তীরনই, নোনা, কুলিক, লাচ্চি, শুক ও সেনুয়াসহ ঠাকুরগাঁও জেলার অভ্যন্তরে ১২টি নদী প্রবাহিত হয়েছে। দিন দিন পানির অভাবে নাব্যতা হারাচ্ছে এসব নদী।

স্থানীয়রা জানান, খননের অভাবে নাব্যতা হারাচ্ছে একসময়ের প্রমত্তা এসব নদী। এতে করে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে এসব নদীর শাখা নদীগুলো। অবস্থা এমন যে, শুষ্ক মৌসুমে নদীগুলো শুকিয়ে ‘মরা গাঙে’ পরিণত হওয়ার উপক্রম।তারা জানান, শুকিয়ে আসতে থাকা ১২টি নদীর বিস্তীর্ণ বুকে জেগেছে বিশাল চর ও অসংখ্য ছোট-ছোট ডুবোচর। নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মিঠাপানির অন্তত ৬৫ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে।নদীগুলো শুকিয়ে ছোট হয়ে আসায় বর্তমানে ভূমিহীন চাষিদের অনেকেই নদীর বুকে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কেউ কেউ নদীর আশপাশ দখল করে তৈরি করেছেন বাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা।শামসুল হক নামের একজন জানান, এক সময় এসব নদী-নালা ও খাল-বিল এবং এসব নদীর শাখা-প্রশাখাগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে বোয়াল, গলদা, পাবদা, পুটিঁ, গজার, শোল, মাগুর, কৈসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত।

কিন্তু এখন পানির অভাবে মাছ তো দূরের কথা, নদীগুলোই হারিয়ে যেতে বসেছে। দ্রুত খনন করে এসব নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা দরকার।নিতাই নামের এক জেলে জানান, আগে নদীতে অনেক মাছ পাওয়া যেত। ওই মাছ বিক্রি করে তারা জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন নদীতে পানির অভাবে মাছ পাওয়া যায় না। ফলে পেশা পাল্টাতে হবে তাদের।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী ড্রেজিং করে বাঁধ ও জলকপাট নির্মাণ করতে হবে।ইতোমধ্যে নদীর পানির নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে নদীগুলো পূর্বের অবস্থা ফিরে পাবে বলে জানান তিনি।