%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%95-%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a4-%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b2

পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জঙ্গি আস্তানায় ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার দাবি করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার ভারত বলেছে, ভারতে ঢুকে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া সন্দেহভাজন জঙ্গিদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে তারা।ভারতের ‘আক্রমণ রুখতে’ গিয়ে দুজন সেনা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও পাকিস্তান তাদের ভূখন্ডে ভারতীয় হানার কথা অস্বীকার করেছে।নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়, নিয়ন্ত্রণরেখায় ওই ঘটনার সময় কমপক্ষে আট ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানি বাহিনীর গুলির ভয়ে তাঁদের মৃতদেহও উদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি ভারতীয় বাহিনী। এ ছাড়া এক ভারতীয় সেনাকে আটক করা হয়েছে।তবে পাকিস্তানের এ দাবি নাকচ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

এদিকে,ভারতকে ইঙ্গিত করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, মাতৃভূমির জনগণ ও এর সার্বভৌম অষন্ডতা রক্ষায় যেকোনো ধরনের আগ্রাসন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবো আমরা।সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) তুমুল উত্তেজনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।নওয়াজ শরিফ বলেন, আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে যেকোনো আগ্রাসন থেকে রক্ষা করবো। পুরো জাতি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে।তিনি কাশ্মীর ইস্যুকে অমীমাংসিত দাবি করে বলেন, উপমহাদেশ বিভক্তির অমীমাসংসিত এজেন্ডা কাশ্মীর। এটা কারও ইচ্ছে অনুযায়ী চলতে পারে না। ভারতীয় স্বৈরশাসনে কাশ্মীরের জনগণের ইচ্ছে চাপা পড়তে পারে না।মন্ত্রিসভার বৈঠকে কাশ্মীর ও নিয়ন্ত্রণ রেখাকেন্দ্রিক উত্তেজনার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

এদিকে, নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল) ঘিরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক (সুনির্দিষ্ট টার্গেটে হামলা) ও পাল্টা আঘাতের খবরের মধ্যে ভারতের কাশ্মীরে চলছে বাংকার (মাটির নিচে গর্ত করে আশ্রয়) খোঁড়াখুঁড়ি। নিজেদের নিরাপত্তায় সেখানকার জনগণ পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এ বাংকার খুঁড়ছেন।শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ ক’দিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো ছাড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা। এরপরও যারা থেকে যাচ্ছিলেন, তারা গত বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাকিস্তান ভূ-খন্ডের ২ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর পর চিন্তিত হয়ে পড়ছেন।সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরই মূলত কাশ্মীরের বান্দিপোরা, পুঞ্চ ও কুপওয়ারা জেলাসহ সংলগ্ন এলাকার লোকজন বাংকার খুঁড়তে শুরু করেছেন। প্রশাসনের তরফ থেকেই তাদের বাংকার খুঁড়ে রাখতে বলা হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে পাকিস্তানের পাল্টা গুলিতে ১৪ সৈন্য নিহত ও একজনকে বন্দি করার দাবি গণমাধ্যমে ছড়ানোর পর বাংকার খোঁড়ার তোড়জোড় আরও বেড়ে গেছে।

তবে যারা বাংকার খুঁড়ছেন না এবং একেবারে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করছেন, তাদের সরিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন। কাশ্মীরের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিংহ যেমনটি বলেছেন, আমরা নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন বাসিন্দাদের সরানো শুরু করেছি। দেখা যাক ভবিষ্যতে কী হয়!রাজ্যের প্রশাসন আশঙ্কা করছে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রতিক্রিয়ায় আগামী ক’দিন পাকিস্তানের দিক থেকে গোলাগুলি বাড়বে। সেজন্য টংধর, কেরান এবং মচিলের মতো প্রায় ৩০০ গ্রামের বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব গ্রামগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে প্রশাসন।

১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এসব এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনেরই পরামর্শে বাংকার খুঁড়েছিলেন। সেসময় গোলাগুলি হলেই লোকজন ওইসব বাংকারে আশ্রয় নিতেন। কিন্তু ২০০৩ পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা হয়ে আসায় ওই বাংকারগুলো ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেই বাংকারগুলোই আবার খুঁজতে হবে, নতুবা খুঁড়তে হবে নতুন করে।

এদিকে, ভারত সীমান্তে যখন এ ধরনের বাংকার খোঁড়াখুঁড়ি চলছে, তখন পাকিস্তানের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোও খালি করার খবর আসছে। এমনকি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, পাকিস্তান সীমান্ত খালি করে সেখানে সেনা অবস্থান ও অস্ত্রশস্ত্র মজুদ বাড়িয়েছে।গত ১৮ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলা ১৮ ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ সম্পর্কে উত্তেজনা এখন চরমে। দু’পক্ষই সীমান্তে সেনা মোতায়েন ও তৎপরতা বাড়িয়েছে। দফায় দফায় যুদ্ধবিমানের মহড়া চালাচ্ছে পাকিস্তান। আর ভারতও প্রস্তুত করছে তাদের যুদ্ধবিমানকে।দু’পক্ষের মধ্যে বাকযুদ্ধের মধ্যে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বয়কট করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাকিস্তান ভূ-খন্ডের ২ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক (সুনির্দিষ্ট টার্গেটে হামলা) চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। এতে দুই পাকিস্তানি সৈন্য ও ৩৮ জঙ্গি নিহত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের সেনাবাহিনীর পাল্টা আঘাতে ১৪ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে, এমনকি তারা আটকও করেছে এক ভারতীয় সৈন্যকে । যদিও তা নাকচ করে দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানি গণমাধ্যমের একটি অংশ ভারতীয় সেনা নিহত ও আটকের যে খবর দিচ্ছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।কিন্তু ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র রয়টার্সকে বলে, ৩৭ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের এক সদস্যকে যে পাকিস্তানি পক্ষ অস্ত্রসহ আটক করেছে এ খবর নিশ্চিত। ভারতের সার্জিক্যাল অপারেশনের পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের হামলায় ভারতীয় আট সেনা নিহতের দাবি ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো এমন খবর জানায়।ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানায়, পাকিস্তানের মিডিয়ায় ভারতীয় আট সেনা সদস্য এবং ভারতীয় এক সৈন্যকে আটকের দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ওই দাবি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর দাবিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করার খবর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।এর আগে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার পর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানায়, ভারতের সার্জিক্যাল অপারেশনের পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের হামলায় ১৪ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত রেখা ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ অতিক্রম করে পাকিস্তানি সেনারা হামলাটি চালিয়েছে বলে দাবি করছে দেশটি। অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের হামলায় আট ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, দেশটির বেসরকারি টিভি চ্যানেল ‘জিও নিউজ’র সাংবাদিক হামিদ মীর এক টক শোতে দাবি করছেন, দুই সেক্টরে হামলায় ঘটনায় ১৪ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ইজাজ আওয়ান তার দাবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এ ঘটনায় চান্দু বাবুলাল চৌহান নামে এক ভারতীয় সৈন্যকে আটক করে হাজতে পাঠিয়েছে পাকিস্তান। তবে তাকে আটকের বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। অবশ্য নয়াদিল্লিভিত্তিক ভারতীয় এক সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা জানান, একজন ভারতীয় সৈন্য ৩৭ রাষ্ট্রীয় রাইফেল ও অস্ত্রসহ অসাবধানতাবশত লাইন অব কন্ট্রোল অতিক্রম করে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে।

পাকিস্তানি একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, নিহত ভারতীয় সেনাদের মরদেহ সীমান্ত রেখার ওপর পড়ে আছে। পাকিস্তানি সেনাদের হামলার ভয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়নি।গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত শাসিত কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলা ১৮ ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় রূপ নেয়। দু’পক্ষই সীমান্তে সেনা মোতায়েন ও তৎপরতা বাড়িয়েছে। দফায়-দফায় যুদ্ধবিমানের মহড়া চালাচ্ছে পাকিস্তান। আর ভারতও প্রস্তুত করছে তাদের যুদ্ধবিমানকে।

দুই পক্ষের দাবির সত্যতা কোনো নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা যায়নি। তবে এ হামলা পরমাণু শক্তিধর দুই বৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে উরির সেনাছাউনিতে ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ জন ভারতীয় সেনাসদস্য নিহত হন। এ হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। উরির হামলার পর প্রথম কোনো সামরিক অভিযান পরিচালনা করল ভারত।

ভারতের সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রণবীর সিং বৃহস্পতিবার বলেন, গত বুধবার মধ্যরাতে এই হামলা করে ভারত। তিনি বলেন, ‘কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সুনির্দিষ্ট ও যথাযথ তথ্যের ভিত্তিতেই এ হামলা করা হয়।’ তিনি বলেন, বুধবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া এ হামলা শেষ হয় বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটায়। রণবীর সিং বলেন, তিনি পাকিস্তানের ডিজিএমওকে এ হামলার বিষয়টি জানিয়েছিলেন।তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ভারতীয় এ দাবিকে একেবারে ভিত্তিহীন ও সর্বৈব মিথ্যা’ বলে আখ্যায়িত করেন। মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম বাজওয়া বলেছেন, দুই ডিজিএমওর মধ্যে দুই দেশের সীমান্তে গুলিবিনিময়ের বিষয়ে কথা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ ধরনের যোগাযোগ হয়েছে। আসিম বাজওয়া পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল জিয়ো টিভিকে বলেন, ভারতের দাবি আমরা প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের ভূখ-ে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। গত রাতে গোলাগুলি হয়েছে। আমরা এর জবাব দিয়েছি।

পাকিস্তানের মাটিতে হামলা চালানোর ঘটনা প্রকাশকে নজিরবিহীন বলে আখ্যায়িত করেছেন নয়াদিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের অজয় সাহানি। তিনি বলেন, এ হামলার মধ্য দিয়ে ভারত সরকার নিজ দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক মহলকেও বার্তা দিতে চেয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিতে ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন চায়। পাশাপাশি এ ধরনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নিতে তিনি যে সক্ষম, তা প্রমাণের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ওপরও ব্যাপক চাপ রয়েছে।যে সময়ে এ হামলা হলো, তা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল রাহিল শরিফের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে শিগগিরই। তাঁর স্থলাভিষিক্ত কে হবেন এখনো সেই ঘোষণা দেননি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। নওয়াজ শরিফ এ হামলাকে ‘বিনা প্ররোচনায় নগ্ন’ হামলা বলে আখ্যায়িত করেছেন। পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে তিনি আজ শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন।বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপরই ভারতের পক্ষ থেকে হামলার কথা জানানো হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতীয় এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে আমাদের যা করার দরকার ছিল তা-ই হয়েছে। বিশ্বকে এটি জানান দেওয়া দরকার, এখন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা খুব গুরুত্বপূর্ণ।পাকিস্তানে প্রবেশ করে ভারতীয় হামলার খবর প্রকাশের আগে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুসান রাইস। হোয়াইট হাউস এ কথা জানায়। রাইস সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে আরও নিবিড় সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের ভিমবার, হটস্প্রিং, কেল ও লিপা এলাকায় গতকাল ছয় ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি হয় বলে জানায় পাকিস্তান। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাকিস্তানের দিক থেকে গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে। গতকাল দিন পর্যন্ত এটি চলে। তবে এতে ভারতের কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা জানানো হয়নি।ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পুরো কাশ্মীর নিজেদের বলে দাবি করে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে স্বাধীন হওয়ার পর দুটি দেশ এ পর্যন্ত তিনটি যুদ্ধে জড়ায়। এর মধ্যে দুটিই হয় কাশ্মীর নিয়ে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গত জুলাইয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বুরহান ওয়ানি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার পর সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এর মধ্যেই ১৮ সেপ্টেম্বরের উরি হামলা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। ভারত এ হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করে দেশটির ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ শুররুকরে। সদ্য শেষ হওয়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে পাকিস্তানকে একঘরে করার দাবি করে তারা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এ হামলার নিন্দা জানায়। নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী রাষ্ট্র ও পাকিস্তানের বন্ধু হিসেবে পরিচিত চীন দুই দেশের মধ্যে আলোচনার তাগিদ দেয়। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে গত বুধবার ভারত, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় সার্ক সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দেয়।