দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষা খাত নিয়ে দুদকের কাছে অভিযোগের পাহাড় জমে আছে। আগামী তিন মাস দুদক এসব অভিযোগে হাত দেবে না। তিন মাস পর এ রকম কোনো অভিযোগ না এলে প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে আসা পুরোনো অভিযোগগুলো ফেলে দেওয়া হবে।বৃহস্পতিবার পিটিআই মিলনায়তনে প্রাথমিক শিক্ষায় সুশাসন নিশ্চিতকরণে চট্টগ্রাম বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধবিষয়ক মতবিনিময় সভায় দুদকের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে দুদকের কাছে বস্তায় বস্তায় অভিযোগ এসেছে। শিক্ষকদের পেনশনের কাগজপত্র তৈরির জন্য, শিক্ষকদের বদলি, নারী শিক্ষকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি, অর্জিত ছুটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে শিক্ষা কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের খাতা মূল্যায়নসহ কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রকৃত ফলাফল পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে, ফলাফল কারচুপির মাধ্যমে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মেধাতালিকায় প্রথম থেকে পঞ্চম স্থানে উন্নীত করা হচ্ছে। কিছু কিছু শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকে প্রাইভেট পড়ানো বা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকছেন, তাঁদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দেখেও না দেখার ভান করে থাকার অভিযোগ রয়েছে।এসব অভিযোগ উপস্থাপনের সময় মতবিনিময়সভায় উপস্থিত শিক্ষা কর্মকর্তাদের কেউ কেউ ‘না’ বলে প্রতিবাদ করেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা এসব অভিযোগ মানেন না। তাহলে ছোট্ট একটি উদাহরণ দিইÑচার বছর ক্লাস্টারে কোনো পরিদর্শন হয়নিÑএমন কথা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন। আপনাদের কাছে এর কোনো জবাব নেই। আমি নিজেও জানি, কোনো কোনো ক্লাস্টারে পরিদর্শন হয় না।

সভায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, তিন মাস এসব অভিযোগ রেখে দেব, একটিও ধরব না। যে অভিযোগগুলো এসেছে, এগুলো সব মিথ্যাÑএ ধারণা নিয়ে বলছি, তিন মাস অপেক্ষা করব। আশা করছি, এরপর এ রকম কোনো অভিযোগ আসবে না, তখন পুরোনো অভিযোগগুলো সব ফেলে দেব। সবাই এটা মনে রাখবেন। যত সীমাবদ্ধতা থাকুক না কেন, যে যার জায়গায় থেকে নিজ দায়িত্ব পালন করবেন। সার্টিফিকেটের পেছনে না ছুটে শিশুদের প্রকৃত শিক্ষা দেবেন।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ উজ জামান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ প্রমুখ।