রুহুল-কবির-রিজভী-আহমেদ

ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যাকান্ড নিয়ে র‌্যাব ও পুলিশের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এই মামলায় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানোর’ প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে র‌্যাবের ডিজি বলছেন, তাভেল্লা হত্যার সাথে নিউ জেএমবির নেতারা জড়িত। আর তারপরেই সংবাদ সম্মেলন করে ডিবির জয়েন্ট কমিশনার বলছেন, না আমরা তদন্ত করে দেখেছি, এটা সঙ্গে কাইয়ুম সাহেব ও তার ভাইরা জড়িত। বাহ!আজকে এরাই তাদের বির্তক তৈরি করেছে। এই যে প্রকাশ হয়ে পড়লো, ফাঁস হয়ে গেলো যে, এটা একটা ষড়যন্ত্র। তাভেল্লা হত্যাকান্ডে বিএনপি নেতা কাইয়ুম-মতিনকে জড়িত করা- এটা হচ্ছে একটা ষড়যন্ত্র। আজকে তাদের বির্তকের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়ে গেল।

গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর কূটনৈতিক পাড়া গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লাকে (৫১) গুলি করে হত্যার প্রায় এক মাস পর ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমের ভাই আব্দুল মতিন, তামজিদ আহম্মেদ রুবেল ওরফে শুটার রুবেল, রাসেল চৌধুরী ওরফে চাকতি রাসেল, মিনহাজুল আরেফিন রাসেল ওরফে ভাগ্নে রাসেল ও সাখাওয়াত হোসেন ওরফে শরীফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে ।বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা আলোচিত এই মামলায় ২৪ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রেখেছেন।রিজভী বলেন, এটা এখন সুস্পষ্ট- এই যে তাভেল্লা হত্যা মামলার চার্জশিট টাইপ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অথবা সুধাসদন ভবনে, অন্য কোথাও নয়। অর্থাৎ সরকার যা বলেছেন, সেইভাবেই চার্জসিট সাজানো হয়েছে।তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে এই কাজটি তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র বিএনপির নেতাদের এই ঘটনার সাথে জড়িত করার জন্য।

নূন্যতম গণতান্ত্রিক ও নাগরিক অধিকার হরণের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চাপা দেওয়ার কৌশল হিসেবে সরকারই জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে বলে রিজভীর ভাষ্য।আজকে গণতন্ত্র হত্যা করা, মানুষের নাগরিক অধিকারকে হত্যা করা, গণতন্ত্রের যেসকল নূন্যতম অবদানকে দলিত-মথিত করা- এটার জন্য দৃষ্টিটাকে অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখতে এই জঙ্গি সৃষ্টি করছে। মানুষ ওই দিকে তাকিয়ে থাকবে, সরকারের অপকর্মের দিকে চাইবে না।এটা করে দিয়ে বিএনপির নাম ঢুকাও, তাদের জড়িত করো। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করে এজন্য সরকারের ‘তল্পিবাহক’ নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেন রিজভী।কাজী রকিবউদ্দিনের নির্বাচন কমিশন এতো ন্যক্বারজনক দালালি করছে, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে যার দৃষ্টান্ত নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংসদ এই সরকারের সিলমোহরের কাজ করছে। এ সমস্ত জায়গাগুলো সরকারের অপকর্ম-অপরাধকে ন্যায্যতা দিয়ে সিল দেয়। সেখানে সরকারের দলের লোকজন বসিয়ে এটা করা হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জনগণকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপি নেতা খালেদা ইয়াসমীন ও আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য রাখেন।