শত চেষ্টা করেও থামানো যাচ্ছেনা হাতির তান্ডব। জামালপুরের বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ও কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজিবপুর দিয়ে ভারতীয় বুনো হাতির তান্ডব বেড়েই চলেছে। এর ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সীমান্তবাসী।অভিযোগ উঠেছে, রাতে বিএসএফ কাঁটাতারের গেট খুলে লাইট জ্বালিয়ে বুনো হাতির দলকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করাচ্ছে।রৌমারীর যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, ভারতের মাইনকারচর থানার কালাইরচর সীমান্ত দিয়ে জামালপুরের বকশীগঞ্জ ,দেওয়ানগঞ্জে ও কুড়িগ্রামের রাজিবপুর, রৌমারীতে প্রতি রাতেই বুনোহাতি নেমে আসে। এতে ফসলি জমির পাশাপাশি বাড়ি ঘর ভাংচুর করে।

জানা যায় বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, রৌমারী পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার ব্যাপী কাঁটাতার রয়েছে। এর মধ্যে আর্ন্তজাতিক মেইন পিলার ১০৬৭ থেকে ১০৭৪ সীমান্ত দিয়ে বুনো হাতিগুলো বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে। তন্মধ্যে পিলার ১০৭১ এর ২৩এস ও ১০৭৪ পিলার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁটাতার না থাকায় ক্ষুধার্ত হাতিগুলো সহজেই সমতল ভূমিতে নেমে আসে। গত ২ মাস ধরে চলছে বুনো হাতির এই তান্ডব ।এতে চার উপজেলায় প্রায় শতাধিক কৃষকের রোপা-ইরি ক্ষেত ১শ’ একর, গম ১৫ একর, কলাবাগান ২একর, ভুট্টা ক্ষেত ১০ একর, আখ ১৫একরসহ প্রায় দেড় শ’ একর ফসলী জমি নষ্ট করে। এছাড়াও মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে অর্ধ শতাধিক ঘর, ২৫টি স্যালো মেশিন, ১০টি নলকুপসহ ঘরে রক্ষিত খাবারের জিনিস ও আসবাবপত্র।কুড়িগ্রাম ৪ আসনের সংসদ সদস্য রুহুল আমিন জানান, ভারতীয় হাতি দলবেধে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এ অঞ্চলের দরিদ্র মানুষকে সর্বশান্ত করে দেয়। এ বিষয়টি তিনি সংসদে উত্থাপন করবেন এবং দু’দেশের মধ্যে আলোচনা করে এর সমাধান করার চেষ্টা করবেন।এ ব্যাপারে কামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল জানান,এখন ইউনিয়ন জুড়েই হাতি আতংক বিরাজ করছে। হাতির তান্ড থামাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এ ব্যাপারে নয়াপাড়া গ্রামের আলাল,মানিক ও রবিজল জানান,যখনই হাতি হামলা চালায় তখন ভারতীয় বিএস এফ সীমান্তে সার্চ লাইট দেয়া হয়। লাইটের আলোতে হাতি নির্বিঘেœ ফসল ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ক্ষতি সাধিত করে। জামালপুর বিজিবি ৩৫ পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ভারতীয় পক্ষ উত্তেজিত হাতির দলকে ঠেকাতে না পেরে গেট খুলে দেয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা ঘটছে। তবে বিএসএফ তাদের সীমান্তে লাইট জ্বালিয়ে রাখায় ভয়ে হাতিগুলো ফেরৎ যেতে পারে না। এতে আমাদের লোকজনের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়।তিনি আরো বলেন, হাতির নিজস্ব চলাচলকে কেউ আটকাতে পারে না। এ ব্যাপারে উভয় দেশের পরিবেশবিদদের আলোচনা করা দরকার। সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে,যাতে ক্ষতি কমানো যায়।