1445107781

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে হিন্দু সম্প্রায়ের সর্ববৃহৎ পূজা উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আগামী ৬ অক্টোবর দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। তাইতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামের হাটহাজরীতে চলছে দুর্গাপূজার ব্যাপক আয়োজন। এই বছর বিগত সময়ের চেয়ে এ উপজেলায় সর্বাধিক মন্ডবে পূজা অনুষ্টিত হবে জানা গেছে। গত বছর পর্যন্ত এ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১টি পৌরসভায় ৯৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্টিত হয়েছিল। অতীতের সব রের্কড ভঙ্গ করে চলতি বছরে ১শ ১০টি মন্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। দায়িত্বশীল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৯টি পূজা মন্ডপকে অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাছাড়া ৩৪টি মন্ডপকে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকী ৪৭টি পূজা মন্ডপ ঝুঁিকপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদয়াপন পরিষদ হাটহাজারী উপজেলা শাখা ও সশ্লিষ্ট প্রশাসন সূত্রে জানা য়ায়, উপজেলার আওতাধীন ১৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর ১নং দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডে এই বছর সর্বমোট ১শ ১০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্টিত হবে। ইতিমধ্যে এসব মন্ডেপে প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। মন্ডপের প্যান্ডলে সাজ সজ্জার কাজ চলছে। প্রতিমা তৈরীর মৃৎশিল্পী এখন ব্যস্থতম সময় অতিবাহিত করছে। প্রত্যেক মন্ডপের পূজা উদযাপন কমিটি প্রতিমা তৈরীর কাজ ও মন্ডপ সাজানোর কাজ মনযোগ সহকারে তদারকি করছে। প্রায় মাসখানিক পূর্বে শব্দ যন্ত্র ও আলোক সজ্জা এবং সাজ সজ্জা অগ্রিম বায়েনা ঠিক করে রেখেছে, তবে এবার বাহিরের মাইক থেকে সাইন্ড সিষ্টেমকে প্রাধান্য দিয়েছে প্রত্যেক মন্ডপে পূজা উদযাপন কমিটি। সনাতনী সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব এই দুর্গাপূজা। এই পূজা স্মরনাতীত কাল থেকে সম্প্রীতির মিলন মেলা হিসাবে এলাকায় বিবেচিত হয়ে আসছে।

তবে এই উপজেলায় বিগত কয়েক বছর পূর্বে চৌধুরী হাট এলাকায় ও রামু, উখিয়া ও পটিয়ার বৌদ্ধ মন্দিরে অনাঙ্খাংকিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণে স্থান বিশেষে কেউ কেউ শংকা যে বোধ করছে না তাও বলা যাচ্ছে না বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন হাটহাজারী উপজেলা শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বাবলু দাশ। তবে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আছে বলেও তিনি দাবী করেন। অবশ্য দায়িত্বশীল প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিরা এই ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ বছর ১নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়নে ৩টি মন্ডপ, ২নং ধলই ইউনিয়নে ১৪টি মন্ডপ, ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নে ১২টি মন্ডপ, ৪নং গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নে ১টি মন্ডপ, ৫নং নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নে ১টি মন্ডপ, হাটহাজারী পৌরসভায় ৯টি মন্ডপ, ৮নং মেখল ইউনিয়নে ১১টি মন্ডপ, ১০নং উত্তর মার্দাশা ইউনিয়নে ৪টি মন্ডপ, ১১নং ফতেপুর ইউনিয়নে ৩টি মন্ডপ, ১২নং চিকনদন্ডি ইউনিয়নে ২৬টি মন্ডপ, ১৩নং দক্ষিন মার্দাশা ইউনিয়নে ৪টি মন্ডপ, ১৪নং শিকারপুর ইউনিয়নে ৭টি মন্ডপ, ১৫নং বুড়িশ্চর ইউনিয়নে ৬টি মন্ডপ ও ১নং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্টিত হবে। ৬নং ছিপাতলী ও ৯নং গড়দুয়ারা ইউনিয়নে কোন পূজা মন্ডপ নেই বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন হাটহাজারী পৌরসভা পূজা উদযাপন কমিটির সাম্পাদক সম্পাদক ছোটন দাশ।

এসব পূজা মন্ডপের মধ্যে ফরহাদাবাদে ৩টি, মির্জাপুরে ৩টি, নাঙ্গলমোড়ায় ১টি, গুমানমর্দ্দনে ১টি, হাটহাজারী পৌরসভায় ২টি, মেখলে ২টি, ফতেপুরে ১টি, চিকনদন্ডিতে ৫টি, দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ৫টি, দক্ষিন মার্দাশায় ২টি, উত্তর মার্দাশায় ২টি, শিকারপুরে ১টি, বুড়িশ্চরে ১টি সহমোট ২৯টি মন্ডপ অধিক ঝুকিপূর্ণ। ধলইতে ৬টি, মির্জাপুরে ৪টি, হাটহাজারী পৌরসভায় ২টি, মেখলে ৪টি, ফতেপুরে ১টি, চিকনদন্দিতে ৮টি, উত্তর মার্দাশায় ১টি, দক্ষিন মার্দাশায় ২টি, শিকারপুরে ২টি, বুড়িশ্চরে ২টি, দক্ষিণ পাহাড়তলীতে ২টি মোট ৩৪টি পূজা মন্ডপ অপেক্ষাকৃত কম ঝুকিপূর্ণ। এছাড়া বাকী ৪৭টি পূজা মন্ডপ ঝুঁিকপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পূজার প্রস্তুতি তথা ঝুকিপূর্ণ মন্ডপ সর্ম্পকে হাটহাজারী উপজেলার পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি পরিমণ কান্তি দে এই প্রতিবেদককে জানান, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎযাপনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহন করছে কমিটি। আশাকরি যথাযগ্যে ও ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা উৎযাপন করতে পারব। এছাড়া আমাদেরকে ঝুকিপূর্ণ মন্ডপ গুলোতে যথেষ্ট নিরাপত্তার প্রদানের আশ্বাস প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।এই ব্যাপারে হাটহাজারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান এই প্রতিবেদককে জানান, প্রতিটি মন্ডপে আইন-শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও শৃংখলা রক্ষায় পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক কর্মী নিয়োজিত থাকবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালনের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। তাছাড়া আইন-শৃংখলা রক্ষায় পুলিশকে সহযোগিতা দেবে আনসার-ভিডিপি। তাদের পাশাপাশি গ্রাম কমিউনিটি পুলিশও নিয়োজিত থাকবে। অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত মন্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারিতে থাকবে। এছাড়া সার্বিকভাবে প্রতি উপজেলাব্যাপী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।