fsfsfffsdfsfsdfsfsঅভাবের তাড়নায় ৫ বছর আগে মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন বৃদ্ধা সখিনা বেগম (৫০)।   প্রথমে মিরপুর এলাকায় থাকলেও পরবর্তীতে ওঠেন মধুবাগের বস্তিতে। বস্তিতে এসে মেয়ে মঞ্জিলাকে বিয়েও দেন। দু’টি ঘর নিয়ে ছেলে কামাল, মেয়ে ও মেয়ে জামাই নিয়ে থাকতেন। বাসা বাড়িতে কাজ করে আর ছেলে কামালকে গ্যারেজে রেখে ভালই যাচ্ছিল সখিনার সংসার। কিন্তু শনিবারে লাগা আগুন সখিনার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। আর এ কারণে পোড়া ঘরের কোণে বসে সখিনার প্রলাপ ‘পরনের বস্ত্রটুকু নেই গো বাজান’। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।  আগুনে নিঃস্ব হওয়া সখিনার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি বলেন, দুই ঘরে অনেক জিনিস ছিল। হাজার পাঁচেক টাকাও ছিল। দুই ঘরের ভাড়ার টাকা সাড়ে ৩ হাজার আলাদা করে রাখা ছিল। এখন কিছুই নেই। পরনের কাপড়টুকু ছাড়া আর কিছুই নেই আমার। সখিনা আরও জানান, সকালে তিনি মগবাজারের এক বাসা বাড়িতে কাজ করতে যান। আর সেখানেই শোনেন আগুনের কথা। সেটা শুনেই তাড়াতাড়ি আসেন বস্তিতে। কিন্তু ততক্ষণে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। শনিবার সকালের আগুনে নিঃস্ব করে ফেলেছে এখানকার হাজারো বস্তিবাসীকে। সখিনার মতোই সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাশেদা, লিপি, জরিনা, সাথি, আয়শাসহ অনেকেই। জরিনা  বলেন, তিনি বাসা বাড়িতে কাজ করেন। আর স্বামী সাইদুল এখানকার গ্যারেজের রিকশা নিয়ে রিকশা চালান। সকালে অন্যের বাড়িতে কাজের জন্য বেরিয়ে যান। সেখানেই শোনেন আগুন লাগার খবর। কিন্তু এসে দেখেন সব পুড়ে ছাই। জরিনা বলেন, সবকিছু রুমের ভেতরে ছিল। কিছু টাকা পয়সাও ছিল। কিন্তু এখন আর কিছু নেই। imran__sm_m2_326683333 imran_sm_m1_440767965
গার্মেন্টস কর্মী সাথি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলছিলেন বাগেরহাটে তার বোনের বিয়ে হবে। বোনের বিয়ের জন্য তিনি ১০ হাজার টাকা রেখেছিলেন। কিন্তু সর্বনাশা আগুনে তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। গার্মেন্টস কর্মী রাশেদাও তার দুঃখের কথা মোবাইলে জানাচ্ছিলেন গ্রামে থাকা বাবা-মার কাছে। তিনি বলেন, মাগো আমার সব শেষ হয়ে গেছে মা, এখন আর কিছুই নাই।
গার্মেন্টস কর্মী ফাতেমা জানান, গার্মেন্টসে সকালে কাজ করতে যাই। পরে শুনতে পাই আগুন লেগেছে। কিন্তু গার্মেন্টস থেকে আমাদের বের হতে দেওয়া হচ্ছিল না। অনেক কষ্ট করে বের হয়ে এসে দেখি সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, বেতনের টাকাসহ কিছু টাকা পয়সা ও টিভি ছিল। কিন্তু কিছুই আর পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সোয়া ৮টার দিকে বস্তির উত্তর পূর্ব কোণে রিকশার গ্যারেজের কাছে এক ঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই পুরো বস্তিতে তা ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু ততক্ষণে আগুনে পুড়ে বস্তির প্রায় ছয়শ’ ঘর ছাই হয়ে যায়। পরে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।