10402_indiaআগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী বৃহৎ দুই রাজনৈতিক দল সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবে না ধরে নিয়ে আঞ্চলিক দলগুলি তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দলের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা খোলা রেখেছে। তবে বামদলগুলি এবারও অ-কংগ্রেসী ও অ-বিজেপি তৃতীয় বিকল্প তৈরির পথ খোলা রেখে সব আঞ্চলিক দলকে একজোট করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। গত বুধবার দিল্লিতে বাম দলগুলির সহ ভারতের মোট ১১টি আঞ্চলিক দল জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিল চার বাম দল, সমাজবাদী পার্টি, জেডি(ইউ) ছাড়াও এআইডিএমকে, বিজু জনতা দল, অসম গণ পরিষদ, জেডি(এস), ঝাড়খন্ড বিকাশ মোর্চার নেতারা । বৈঠক শেষে সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, সংযুক্ত জনতা দল নেতা শরদ যাদবও জনতা দল সেকুলারের নেতা এইচ ডি দেবগৌড়ার মত নেতারা  ঘোষণা করেছেন, আপাতত সংসদে তাঁরা একটি অভিন্ন গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করবেন। দুর্নীতি দমনে আধ ডজন বিল পাশ করিয়ে সংসদের চলতি অধিবেশনকে কংগ্রেস যদি রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ব্যবহার করতে চায়, তা হলে তার বিরোধীতা করবেন তারা একসঙ্গে। তার পর এই জোটকে কী ভাবে সংসদের বাইরে নির্বাচনে কাজে লাগানো যায় তা ঠিক করা হবে। বামদের আশা আগামী দিনে আরও কয়েকটি দল এই জোটে যুক্ত হবে। তবে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি এখনও কিছু স্পষ্ট না করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস আগামী নির্বাচনে একলা চলার নীতি ঘোষণা করেছে । তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্যান্য রাজ্যে প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছে, তারাই আগামী নির্বাচনে তৃতীয় বৃহৎ দল হবে। আর নির্বাচনের পরই মমতার ঘোষিত ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। মমতাকে যাতে আগামীদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী করা যায় সেজন্য তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মমতাকে সমর্থন জানানোর ইঙ্গিত দিয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রবীণ গান্ধীবাদী ও দুর্ণীতি বিরোধী আন্দোলনের নেতা আন্না হাজারে।  তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতার ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টায় পানি ঢেলে দেবার লক্ষ্যেই বাম দলগুলি সব আঞ্চলিক দলকে একজোট করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ার পর তাদের অস্তিত্বকে জানান দেওয়ার এটাও একটি পথ বলে মনে করছেন তারা। তবে কংগ্রেস নেতাদের মতে, এই বিকল্প জোট কোনও ভাবেই সরকার গঠনের জায়গায় পৌঁছবে না। এই জোট বা তাদের শরিক দলগুলিকে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যেই কাউকে বেছে নিতে হবে। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেছেন, লোকসভা ভোটের আগে এই জোটের কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। ভোটের পরেই ঠিক হবে, কে কার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বও বামেদের এই বিকল্প জোট খাড়া করার চেষ্টাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন।