10557_a1 ক্রেস্ট না, ক্যাশ চাই, ক্যাশ মর্মে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের চাঞ্চল্যকর বক্তব্যকে গণতন্ত্র এবং সুশাসনের জন্য অশনিসংকেত  হিসাবে চিহ্নিত করেছে ট্্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। অনতিবিলম্বে তার এ বক্তব্য  প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে এরূপ লাগামহীন দুর্নীতি সহায়ক অবস্থান সংসদের চিফ হুইপের পদের মর্যাদার সাথে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ তা  বিবেচনার জন্য সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী  ও স্পিকারের প্রতি  আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী এই সংস্থা। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতীয় গণমাধ্যমে এবং স্থানীয় কেবল চ্যানেলে প্রচারিত চিফ হুইপের বক্তব্য শুধু ন্যাক্কারজনকই নয় বরং তা দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য অশনিসংকেতও বটে। সংবর্ধনার জন্য উপঢৌকন হিসেবে ক্রেস্টের পরিবর্তে নগদ অর্থ প্রদানের জন্য জাতীয় সংসদের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির  প্রকাশ্য জনসভায় এ ধরনের নজিরবিহীন বক্তব্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি নির্মূলের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একইভাবে  প্রকাশ্যে টাকা চাওয়া দুর্নীতিরই নামান্তর যা অন্য দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করবে। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , স্পিকার এবং জাতীয় সংসদ কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তা দেশবাসীকে জানাবার জন্য আহ্বান করছি। সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অনুপার্জিত আয়কে পরিষ্কারভাবে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বলা হয়  জাতীয় সংসদের সদস্য, এমনকি চীফ হুইপ পদে আসীন একজন ব্যক্তির পক্ষে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ঘোষণা দিয়ে শুধু দুর্নীতি সহায়ক অবস্থানই  নেননি, বরং সংবিধান লংঘন করেছেন। আমরা আরও উদ্বিগ্ন এ কারণে  যে, ইতিপূর্বে যারা বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের কাছে দশ লাখ  টাকা করে চাঁদা  প্রদানের আহ্বান জানানো হয়েছিল। সরকারের এ  ধরনের অবস্থান রাজনীতি ও সরকার পরিচালনায় নৈতিকতা বিবর্জিত অন্ধকার জগতে নিমজ্জিত করবে। এতে আরও বলা হয় নির্বাচন করতে অনেক (টাকা) লাগে’ মর্মে চিফ হুইপের বক্তব্যকে ঠাট্টা-তামাশা নয়, বরং অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আখ্যায়িত করে নির্বাচনে কালো টাকা এবং রাজনীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের  যে ধারা সাম্প্রতিককালে হলফনামাসহ বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তারই এক লাগামহীন প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ইঙ্গিত বলে ড. জামান অভিমত  প্রকাশ করেন। নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে চীফ হুইপ গণমাধ্যমকে যে সাফাই যুক্তি দেখিয়েছেন তাও পুরোপুরি অগ্রণযোগ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে তিনি চিফ হুইপের বক্তব্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর  অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানান এবং নবম সংসদে উত্থাপিত সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি খসড়া আইনটি প্রণয়নের দাবি জানান।