অস্ত্রোপচার ছাড়াই এক রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হলো ষুদ্র আকারের সীসাবিহীন কার্ডিয়াক পেসমেকার যন্ত্র । এটি প্রতিস্থাপন করেছেন বিবেক রেড্ডি নামে আমেরিকার এক প্রবাসী ভারতীয় চিকিৎসক।
তিনি দ্য মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে এই যন্ত্রের প্রতিস্থাপন করেন। এই পেসমেকারটির মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য এবং এটি সাধারণ পেসমেকারের তুলনায় প্রায় দশ গুন ছোট।
অতিক্ষুদ্র এই যন্ত্রটি সেন্ট জুড মেডিকেলল তৈরি করেছে এবং এর নিরাপত্তা ও কার্যক্ষমতা আন্তর্জাতিক স্তরে গবেষণা করা হয়েছে। এই গবেষণাটির নাম দেওয়া হয়েছিল লেডলেস ২। এতে আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপের প্রায় ৫০টি হাসপাতালের ৬৭০ জন রোগী অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
চিকিৎসক রেড্ডি জানিয়েছেন, এই যন্ত্রটি সত্যিই একটি অভাবনীয় আবিষ্কার। বিনা অস্ত্রোপচারের পেসমেকার রোগীদের একটি নতুন অভিজ্ঞতা।
তিনি আরও জানান, নতুন এই ছোট্ট পেসমেকার যন্ত্রটিকে অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে করা হচ্ছে। এর কারণ এতে শিশা ব্যবহার করা হয়নি এবং এটিকে রোগীর বুকের চামড়ার তলায় প্রতিস্থাপন করা যায়।
অন্যান্য পেসমেকার যন্ত্রের মত এই ক্ষুদ্র যন্ত্রটিও একইভাবে কাজ করে। ফলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে, একে ব্রাডিকারডিয়া বলা হয়। এই যন্ত্রটি হৃদযন্ত্রকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করে এবং হৃদস্পন্দন খুব ধীর গতিতে হলে এটি একটি বৈদ্যুতিক উদ্দীপনার সৃষ্টি করে হৃদযন্ত্রকে সক্রিয় করে।
গবেষকেরা জানান, প্রায় ৪০ লাখষ রোগীরা পেসমেকার ব্যবহার করেন এবং প্রায় ৭ লাখষ মানুষ প্রতিবছরে একটি করে পেসমেকার ব্যবহার করে থাকেন।
শিশা বিহিনী এই পেসমেকার যন্ত্র ব্যবহারের কয়েকটডি সুবিধাও রয়েছে। যেমন: এটি কোনও দৃশ্যমান ডিভাইস নয়, এটি সংযোজনের জন্য বুকের চামড়ায় গর্ত করার প্রয়োজন পড়ে না, এতে কোনও সংযোগকারী তার থাকে না এবং রোগীর গতিবিধির উপর কোনও সীমাবদ্ধতা থাকে না।
এছাড়াও এটিতে রোগর অস্বস্তি বা কোনও ধরনের সংক্রমণ হয় না।
এই গবেষণার মুখ্য তদন্তকারী শ্রীনিবাসন দুক্কিপাতি জানিয়েছেন, অন্যান্য পেসমেকার যন্ত্রের মতই এই শিশাবিহীন ক্ষুদ্র আকৃতির ডিভাইসও একইভাবে কার্যকরী এবং এতে অস্ত্রোপচারের ঝামেলাও যেমন নেই, তেমনই শিশা সংক্রমণের ঝুঁকিও একেবারে নেই বলেই চলে।
