dipu_43363মানিকগঞ্জে চলন্ত বাসে গার্মেন্টকর্মী ধর্ষণের দায়ে বাস চালক দীপু মিয়া ও হেলপার কাশেম আলীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার  টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে  আদালত।আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ একেএম মোস্তফা দেওয়ান।মামলা সুত্রে জানা যায়  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০এর ৯(১)ধারায়  বাসচালক দিপুমিয়াকে  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০এর ৯(১)/৩০ ধারায় হেলপার কাশেম আলীকে  যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। একই আইনে ২০০০-এর ৯(৪)(খ) ধারায় দিপু মিয়াকে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।বাসচালক দিপু মিয়া (৩২) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গুরকি গ্রামের আতরাফ হোসেনের ছেলে এবং হেলপার কাশেম আলী (২৬) একই উপজেলার দুলাপাড়া গ্রামের বিন্দু মিয়ার ছেলে।

গত বছরের ২৪ জানুয়ারি আরিচাগামী বাসে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে গার্মেন্ট কর্মীও বাসে ওঠেন। বাস খারাপ হওয়ার অজুহাতে হেলপার নবীনগরে  যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। হেলপার কাশেম আলী সকল যাত্রীর টাকা ফেরত দিলেও ওই গার্মেন্ট কর্মীকে ভাড়ার টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করে। সকল যাত্রী ভাড়া ফেরত পেয়ে চলে গেলে গাড়ি ঠিক হয়েছে বলে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে গন্তব্যস্থল আরিচার দিকে রওয়ানা দেয়। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলন্ত বাসে বাসে ধর্ষণের পর মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মানরা এলাকায় তরুণীকে ফেলে দেয়।

বাদাম বিক্রেতা আব্দুল  মান্নান পুলিশকে খবর দিলে ওইদিনই  তরুণীকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। ঘটনার দিনই গার্মেন্ট কর্মী বাদী হয়ে বাসচালক দিপু মিয়া ও সহকারী কাসেম আলীকে আসামি করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। ওইদিন বিকেলে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে দিপুকে এবং রাতে ঢাকার আশুলিয়ার নবীনগর থেকে কাসেমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন আসামি দিপু ও কাসেমকে আদালতে হাজির করা হলে  তারা দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

জবানবন্দি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক শেখ মো. মুজাহিদ-উল ইসলাম আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযুক্ত বাস চালক দিপু মিয়া ও কাশেম আলীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। চলতি মাসের ৯ তারিখ উভয় পক্ষের শুনানি শেষ হয়। এতে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।