530dd6f21ff22-Mushfiq-Centuryগত কদিন মুশফিকুর রহিমের ওপর দিয়ে ছোটখাটো ‘ঝড়’ই বয়ে গেছে। প্রথমে শুনতে হয়েছে দলের অন্যতম প্রধান ভরসা সাকিব আল হাসানকে পাবেন না টুর্নামেন্টের প্রথম দুই ম্যাচে। ইনজুরির ফাঁড়ায় পড়ে খেলতে পারবেন না তামিম ইকবাল। এরপর দল নির্বাচন নিয়ে অসন্তুষ্টি—সব মিলে রাজ্যের চাপ নিয়েই আজ মাঠে নেমেছেন মুশফিক। উইকেটে যখন এলেন তখনো চাপ।

বাংলাদেশের ১২.১ ওভারে ৪৯ রান তুলতেই নেই ২ উইকেট। সব চাপ পায়ে ঠেলে দুরন্ত গতিতে ছুটলেন মুশফিক। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে শতক। মুশফিকের শতক ও এনামুল হকের অর্ধশতকে ভারতের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৭৯।দলীয় ৪৯ রানে মুমিনুল হক প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর খানিকটা চাপেই পড়ে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ৫০ ওঠার আগেই নেই ২ উইকেট। এনামুল-মুশফিকের তৃতীয় উইকেট জুটি ভালোই সামাল দেয় এ ধাক্কা।

এ জুটিতে আসে ১৩৩। ভারতের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির নতুন রেকর্ড। এনামুল স্পর্শ করেন প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। বরুন অ্যারনের বলে বোল্ড হয়ে এনামুল ফেরেন ৭৭ রানে। তবে বাংলাদেশের ইনিংসের মূল নায়ক অধিনায়ক নিজেই। ছুঁয়েছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে শতক। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আগের সেঞ্চুরিটি ছিল অলক কাপালির, সেটিও ২০০৮ এশিয়া কাপে। মুশফিকের ১১৩ বলে ১১৭ বাংলাদেশের পক্ষে ভারতের বিপক্ষে এটি সর্বোচ্চ স্কোরও।

মুশফিক শুরু করেন ধীরলয়ে। প্রথম বাউন্ডারি হাঁকান ৩৭তম বলে। ফিফটির পরেই হাত খুলে খেলতে থাকেন। মুশফিক ফিফটি করেছেন ৬৫ বলে। আর ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে লেগেছে মাত্র ৩৯ বল। বাংলাদেশ অধিনায়কের রুদ্ররূপ প্রথম প্রকাশ পায় আম্বাতি রাউড়ুর করা ২৯তম ওভারে। ওই ওভারের প্রথম ও শেষ বলে মারেন দুই চার। তবে বেশি চড়াও হয়েছেন বরুন অ্যারনের ওপর। এ ডানহাতি পেসারের এক ওভারেই তুলেছেন ১৭।

অ্যারনের করা সেই ৩৯তম ওভারে ঘটেছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। দুটো চার আর এক ছক্কা খেয়ে বোলিং লাইনের পাশাপাশি অ্যারন যেন মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এরপরই মুশফিকের শরীর বরাবর ছোড়েন এক বিমার। সেটি আঘাত করে একেবারে বাংলাদেশ অধিনায়কের পাঁজরে। মুহূর্তেই মাটিতে পড়ে যান মুশফিক। যন্ত্রণায় কাতরান খানিকক্ষণ। ভারতের ডানহাতি বোলারের এমন নেতিবাচক বোলিংয়ে স্তব্ধ হয়ে যায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। অবশ্য শেষ পর্যন্ত মুশফিক সেই যন্ত্রণা ভারতীয় বোলারদেরই ফিরিয়ে দিয়েছেন সংহারী ব্যাটে।

আজ বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে তুলেছে ৭১। এ ছাড়া ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে (৩৬-৪০ ওভার) বাংলাদেশ তুলেছে ৪৬, এ সময় খুইয়েছে ১ উইকেট। প্রথমে ব্যাট করে ২৭৯ কিংবা এরও বেশি রান করে বাংলাদেশ জিতেছে ৫ বার, হেরেছে ২ বার। আর দুবারই হেরেছে ভারতের বিপক্ষে। আজ নিশ্চয় ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে চাইবে না মুশফিকের দল। এ ছাড়া আরেকটি রেকর্ডও আশা জাগাচ্ছে বাংলাদেশকে। এশিয়া কাপে ২৭৯ বা এর বেশি রান তুলে ১৯ বারই জিতেছে প্রথমে ব্যাটিং করা দলটি, হেরেছে মাত্র ৬ বার।