1ক্যান্সারের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হাসপাতালের বাথরুমে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন সখিনা আখতার (৩৫) নামে এক রোগী।
বুধবার ভোরে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এ ঘটনা ঘটে।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল জানান, বার্ন ইউনিটের প্রতিটি ওয়ার্ডে দুই বা তিনটি টয়লেট থাকে। এর পাশেই গোসলখানা ও ড্রেসিং করানোর জায়গা। সেখানেই একটি জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে সখিনা আত্মহত্যা করেন।
তিনি জানান, ক্যান্সারের কারণে সখিনার কোমর ও পিঠে ক্ষতের সৃষ্টির হয়। ১০ মার্চ তাকে এই হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এর আগে তিনি মহাখালীর ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তাকে ২০টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয় বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।
মৃতের স্বজনরা জানান, হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার আশাতলা গ্রামের কৃষক ওয়াহিদ মিয়ার স্ত্রী সখিনা বেগম দেড় বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে এক বছর আগে মহাখালীর ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তার ঘা শুকানো ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য বার্ন ইউনিটে স্থান্তান্তর করা হয়। হাসপাতালে তার দেখাশোনা করতেন মা নূরজাহান বেগম এবং দুই ছেলে কাশেম ও ফয়েজ।
নূরজাহান বেগম জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে দেখেন, সখিনা বিছানায় নেই। তাকে খুঁজতে গিয়ে বাথরুমের দরজা বন্ধ দেখে মায়ের সন্দেহ হয়। পরে তিনি ওয়ার্ডবয়কে ডেকে দরজা খুলিয়ে দেখেন, গ্রিলের সঙ্গে ঝুলছে মেয়ের নিথর দেহ।
সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক সাজ্জাদ খন্দকার জানান, আগামী ৬ এপ্রিল সখিনার অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। তার শরীরের শুকানো ক্ষতস্থানে প্লাস্টিক সার্জারি করা হতো।
মৃতের ছেলে ফয়েজ ও ভাই সুমন জানান, সারাদিন যন্ত্রণায় কাতরাতেন। এ যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেন বলে তাদের ধারণা।
মৃতের ভগ্নিপতি শাহজাহান বলেন, দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন থাকা এবং স্বামী-সংসার নিয়ে দুশ্চিন্তায় সখিনা আত্মহত্যা করেন।
সখিনার পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।