3রায় দেড়যুগ পর গণধর্ষণের বিচার পেলেন ভারতীয় এক নারী। ১৬ বছরের সেই কিশোরীর বয়স এখন ৩৪ বছর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রথমে অপহরণ তারপর ৪০ দিন ধরে আটকে রেখে এক কিশোরীকে প্রায় ৬০ বার ধর্ষণ করে একাধিক ব্যক্তি। তখন মেয়েটির বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। তারপর ১৮ বছর লাগল তার বিচার পেতে। শুক্রবার কেরল হাইকোর্ট এই ঘটনার মূল অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য ১৬ বছরে পা দেওয়া কিশোরীকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ করে এক বাস কন্ডাক্টর। তারপর কেরল ও তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনার মূল পাণ্ডা ধর্মরাজন নামে এক আইনজীবী। টানা ৪০ দিন ধরে চলে এই অত্যাচার। ধর্মরাজনের সঙ্গে এই অত্যাচারে যোগ দেয় অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর এবং ব্যবসায়ী মিলে আরও কয়েকজন।

এতে বলা হয়েছে, তবে মামলাটি আরও গুরুত্ব পায় যখন মেয়েটি রাজ্যসভার ডেপুটি স্পিকার পিজে কুরেইনের নামেও ধর্ষণের অভিযোগ আনে। তবে আদালত কুরেইনকে নির্দোষ বলে এই মামলায় মুক্তি দেয়। মেয়েটিকে কখনও হোটেলে, বাড়িতে বা গাড়িতে প্রায় ৬০বার ধর্ষণ করা হয়। তারপর ১৮ বছর কেটে গেছে। এরমধ্যে মেয়েটি ও তার পরিবার একাধিকবার বদলে ফেলেছে তাদের বাড়ির ঠিকানা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সেই যুবতী বাড়ি থেকে বের হন শুধুমাত্র কাজের জন্যে। বিচারের জন্য মেয়েটি লড়াইটা লড়েছেন একাই, পাশে পেয়েছেন শুধু বাবা, মাকে। তবে বিচার দেরিতে এলেও, আক্রান্ত সেই নারী ও তার পরিবার খুশি, কারণ সত্যিটা আজ সবাই জানতে পেরেছে। আজ এই ঘৃণ্য অপরাধে ২৪জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, একজন নারীর সম্মানহানি করাসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

এবিপি আনন্দ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে কেরল হাইকোর্টের রায় ৩৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৩৪ জনকেই নিরপরাধ ঘোষণা করেছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই নারী ও তার পরিবার। তারপর দীর্ঘ আট বছর অপেক্ষার পর ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ আদালত রায় দেয়, সূর্যনেলি গণধর্ষণ মামলায় পুনরায় বিচার করতে হবে। আক্রান্ত নারী কেরলের ইদ্দুকি জেলার সূর্যনেলির বাসিন্দা। এই মামলার বিচার চলাকালীন ৫ জন অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। তারপর আদালতের রায়ে শুক্রবার এই ঘটনার মূল পাণ্ডা ধর্মরাজন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।