যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে এক নম্বর নয়। অনেক দিক থেকেই অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে মার্কিনিরা। ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে মার্কিন সাংবাদিক নিকোলাস ক্রিস্টোফ এ মন্তব্য করেছেন।

নিবন্ধে নিকোলাস ক্রিস্টোফ লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি সম্পর্কে গোটা বিশ্ব অবগত। আইফোন থেকে আমরাই সবচেয়ে বেশি ফেসবুকে পোস্ট করি। আমাদের যুদ্ধজাহাজ দেখে সবাই ভয়ে কাঁপে। যেখানেই যা ঘটে, লোকে সিআইএকে দোষারোপ করে। সবাই জানে, আমরাই এক নম্বর! কিন্তু সমস্যা হলো, আমাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিকে নিজেদের নাগরিকদের কল্যাণে বা জীবনমান উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করতে পারি না।’

‘আমরা এক নম্বর নই’ শিরোনামে ওই সাংবাদিক তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে নরওয়ের নাগরিকেরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জাপানিদের গড় আয়ু আমাদের চেয়ে বেশি।’

2সম্প্রতি ১৩২টি দেশের জীবনমান বিবেচনা করে প্রকাশিত সামাজিক অগ্রগতি সূচকের প্রসঙ্গ টেনে নিকোলাস ক্রিস্টোফ লিখেছেন, সামাজিক অগ্রগতি সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১৬তম। আর সবার ওপরে নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের পরের অবস্থানে যথাক্রমে সুইজারল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও হল্যান্ড। অথচ এই দেশগুলো মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে পিছিয়ে।’

নিবন্ধে নিকোলাস ক্রিস্টোফ লিখেছেন, ঊনবিংশ শতকে ভাগ্যান্বেষণে আয়ারল্যান্ডের বহু মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে এসেছিলেন। সেই আয়ারল্যান্ড এখন সামাজিক অগ্রগতি সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে। দেশটির অবস্থান বিশ্বে ১৫তম। ‘সুযোগের’ দিক থেকেও এখন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে আয়ারল্যান্ড।

নিবন্ধে বলা হয়, ‘উচ্চতর শিক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু সূচকে সুস্বাস্থ্যের দিক থেকে আমরা বিশ্বে ৭০তম, পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় ৬৯তম, মৌলিক শিক্ষায় ৩৯তম, বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় ৩৪তম, ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় ৩১তম অবস্থানে আছি। এমনকি সেলফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকেও আমরা ২৩তম স্থানে আছি, যা হতাশাজনক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন ইন্টারনেট ব্যবহার করে না।’

নিবন্ধে আরও বলা হয়, সার্বিকভাবে ১৯৭৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ফ্রান্সকে ছাড়িয়ে যায়। অথচ ওই সময়ে ফ্রান্সের শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি নাগরিক সুবিধা পেয়েছে।