1বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য যে করিডোর ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হয়েছে তার কঠোর সমালোচনা করেছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মুক্তির দাবিতে জাসাস কুমিল্লা উত্তর আয়োজিত এক মানববন্ধনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, নিজেদের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে সরকার বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের অনুমতি দিয়েছে। বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ভারতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে লাভ লোকসানের হিসেব করা হয়নি। তাহলে কিসের হিসেবে দেশ চলবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সচিবকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এই বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে বাংলাদেশের কী লাভ হবে? বিদ্যুৎ সচিব বলেছেন, লাভ লোকসানের হিসাব করা হয়নি। আর ভারতের বিদ্যুত  সচিব বলেছেন, এই বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে বাংলাদেশ কিছু বিদ্যুৎ পেলেও পেতে পারে। তাদের এমন বক্তব্যের কঠোর সামলোচনা করে তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফলে বাংলাদেশের কী লাভ হবে সেই আলোচনা যে সরকার করতে পারে না, তাদের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আমরা কী তিস্তার পানি পেয়েছি? আগে বলা হয়েছিল তিস্তার পানি না পেলে ট্রানজিড দেয়া হবে না।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ ৫ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জেলে পাঠানোর জন্যই তা করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুই বছর জেল হলে কেউ নিবার্চনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। জনপ্রিয় নেতাদের নিবার্চন থেকে দূরে রাখার জন্য এটা করা হচ্ছে। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি এই নেতা বলেন, এ সব বন্ধ হয়ে যাবে, আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন। এটাই এক মাত্র সমাধান। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলল সফল হতে পারলে কারাগারে আটক বিএনপির সকল নেতাই মুক্তি পাবে। মানববন্ধন করে কোনো লাভ হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফসহ আটক নেতাদের মুক্তি দাবি করে এ প্রবীণ নেতা বলেন, সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আর বিরোধী নেতারা বিনা বিচারে কারাগারে আটক রয়েছেন। দুর্নীতি, অনাচারে যুক্ত থাকলে যে কারো বিচার হতে পারে। তার জন্য প্রচলিত আইন আছে। কিন্তু দেশে এখন সরকারি দলের জন্য এক আইন, আর বিরোধী দলের জন্য অন্য আইন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের করিডোর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্ব থেকে পশ্চিম অঞ্চলে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়ার গ্রিড লাইনের রুটের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে ভারত বাংলাদেশের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি। দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় এ গ্রিড লাইন আসামের রাঙ্গিয়া রাওতা থেকে বড়পুকুরিয়া হয়ে আবার ভারতে যাবে। এ গ্রিডের বিদ্যুৎ বাংলাদেশও ব্যবহার করতে পারবে বলে জানিয়েছেন দুই দেশের বিদ্যুৎ সচিব।