1দৈনিক বার্তা: বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের এক সংরক্ষিত নারী সদস্য ও তাঁর মাকে পিছমোড়া করে বেঁধে, মারধর করে, মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে।

নির্যাতিত ওই নারী ইউপি সদস্য এবং তাঁর মা জানিয়েছেন, নারী সদস্যের স্বামী রিয়াজ হাওলাদার, তাঁর দুই ভাই ও বন্ধুরা তাঁদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে একই ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য পারভীন মিজান দৈনিক বার্তাকে বলেন, ‘আজ সকালে ওই সংরক্ষিত নারী সদস্য কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুঠোফোনে এ বর্বর ঘটনার কথা আমাকে জানান। বর্বর ঘটনা দেখে ও শুনে আমি বিস্মিত হয়েছি।’ ইউপি সদস্যের স্বামীই স্ত্রী ও শাশুড়ির ওপর এ নির্যাতন চালিয়েছে বলে জানান তিনি।

সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্যের মা জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় তাঁর মেয়ে  দুই দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে অন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। গতকাল রোববার সকালে মেয়ে তাঁর   বাড়িতে ফিরে আসেন। ওই দিন সন্ধ্যায় মেয়েকে নিয়ে তিনি জামাতা রিয়াজের বাড়িতে যান। ওই বাড়িতে যাওয়ার পর রিয়াজ তাঁর মেয়ের ওপর চড়াও হন। তাঁর সামনেই মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। একপর্যায়ে রিয়াজের দুই ভাই ও কয়েকজন বন্ধু মিলে মেয়েকে পিছমোড়া করে বেঁধে মারধর শুরু করেন। রিয়াজ বিছানার নিচ থেকে কাঁচি বের করে মেয়ের মাথার চুল কেটে দেন।

নির্যাতিত ইউপি সদস্যের মা আরও জানান, এ সময় প্রতিবাদ করতে গেলে রিয়াজের চাচাতো ভাই জুয়েল ও তাঁর বন্ধু হাসিব তাঁর  মা দুই হাত ধরে রাখেন। স্ত্রীর  চুল কাটার পরে রিয়াজ তাঁর শাশুড়ির মাথার চুলও কেটে দেন।

মধ্য কালমেঘা গ্রামে নির্যাতিত ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউপি সদস্য লজ্জায়-অপমানে নিথর হয়ে আছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি দৈনিক বার্তাকে বলেন, ‘এইটা আমার কপাল। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা নারী নির্যাতনের বিচার-সালিস করি। আইজ আমার ওপর এই অন্যায়ের বিচার কে করবে।’

এ ব্যাপারে নির্যাতিত ইউপি সদস্যের স্বামী রিয়াজ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আফরোজ জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি এম শাহনেওয়াজ বলেছেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি এবং ভুক্তভোগীকে থানায় এসে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।’