1
‘ওশেন শিল্ড’-এ চলছে সঙ্কেত শোনার চেষ্টা। ছবি: এএফপি।

দৈনিক বার্তা: এ বার সুস্পষ্ট বার্তা পেল মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বোয়িং ৭৭৭-ইআর এর সন্ধানে নামা ‘ওসান শিল্ড’। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন ‘জয়েন্ট এজেন্সি কোঅর্ডিনেশন সেন্টার’-এর (জেএসিসি) প্রধান প্রাক্তন এয়ার চিফ মার্শাল অ্যানগাস হাউস্টন।

এ দিন পারথের ১৬০০ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তর পশ্চিমে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার কিলোমিটার অঞ্চলে অনুসন্ধান চালানোর সময়ে ‘ওসান শিল্ড’-এর সঙ্গে যুক্ত সঙ্কেত গ্রাহক (পিন লোকেটর) দু’টি সঙ্কেত রেকর্ড করে। একটি সঙ্কেত দু’ঘণ্টা ২০ মিনিট স্থায়ী ছিল। ফিরতি পথে ‘ওসান শিল্ড’ আবার একই অঞ্চলে প্রায় ১৩ মিনিট স্থায়ী দ্বিতীয় সঙ্কেতটি রেকর্ড করে। সঙ্কেত দু’টি সমুদ্রের ৪৫০০ মিটার গভীর থেকে আসছে।

এটি কি নিখোঁজ বিমানের ব্ল্যাকবক্সের সঙ্কেত?

হাউস্টন জানিয়েছেন, ‘ওসান শিল্ড’-এর পাওয়া দু’টি সঙ্কতেই কানে শোনা যায় এবং সঙ্কেত দু’টি চরিত্রগত ভাবে ‘ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার’ এবং ‘ককপিট ভয়েস রেকর্ডার’ থেকে পাঠানো সঙ্কেতের মতোই। এর ফলে অনুসন্ধানের জায়গাটি স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। এর আগে শুক্র এবং শনিবার চিনা জাহাজ জিংহুয়া-০১ সঙ্কেত পেয়েছিল। সে ক্ষেত্রেও সঙ্কেত দু’টি এসেছিল ৩৭.৫ হার্ত্‌জ কম্পাঙ্কে। তবে সেই দু’টি সঙ্কেত রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি।

জেএসিসি সূত্রে খবর, ব্রিটিশ জাহাজ ‘এইচএমএস ইকো’ ওই সন্ধানস্থলে যাচ্ছে। এই জাহাজটিতে অত্যাধুনিক ‘সোনার’ প্রযুক্তি রয়েছে। জাহাজটি সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্র তৈরিতেও সক্ষম। ফলে ওখানে নিখোঁজ বিমানটির ধ্বংসাবশেষ থাকলে তা খুঁজে বার করা সহজ হবে বলে জেএসিসি সূত্রে খবর।

হাউস্টন জানিয়েছেন, সঙ্কেতস্থলটি আরও স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত করার পরে নিখোঁজ বিমানের ধ্বংসাবশেষের সন্ধানে ‘ওসান শিল্ড’-এর থাকা জলের তলায় চলতে সক্ষম চালকবিহীন যান ‘ব্লু ফিন-২১’ কে নামানো হতে পারে। যানটি ৪৫০০ মিটার গভীরতায় কাজ করতে পারে।

অন্য দিকে, মালয়েশীয় বিমানটি কেন ওই পথে গেল তা নিয়ে রহস্য কাটেনি। মালয়েশিয়ার আশপাশের দেশগুলির রেডার থেকে পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখা গিয়েছে, বিমানটি ইন্দোনেশিয়ার উত্তর দিক থেকে বাঁক নিয়ে ভারত মহাসাগরের দক্ষিণের দিকে যায়। সূত্রের খবর, এগুলি দেখে মনে হচ্ছে যিনি বিমানটি চালাচ্ছিলেন তিনি রেডার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তা ছাড়া যিনি বিমানটি নিখোঁজ অবস্থায় চালাচ্ছিলেন তিনি এ বিষয়ে দক্ষ। তা হলে বিমানটি ছিনতাই হওয়ার আশঙ্কা জোরালো হয়। কিন্তু মালয়েশীয় প্রশাসনের তদন্তে এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ বিমানটির পাইলট এবং কোপাইলটের সম্পর্কে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।

জেএসিসি সূত্রে খবর, ‘অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরো’ এখনও নিখোঁজ বিমানটির তথ্য বিশ্লেষণ করছে। মালয়েশিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞেরা এই কাজ করছেন। এ কাজে উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্য, বিমানটি থেকে পাওয়া তথ্য কাজে লাগানো হচ্ছে।