1দৈনিক বার্তা: বিশ্বের বুক থেকে ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিলেন জার্মান একনায়ক অ্যাডলফ হিটলার। লক্ষ লক্ষ ইহুদিকে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে হত্যা করেছেন ইতিহাসে খলনায়ক হিসেবে পরিচিত এই রাষ্ট্রনায়ক। সেই হিটলারই নাকি এক ইহুদি নারীকে বিয়ে করেছিলেন! নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

একটি টেলিভিশন প্রামাণ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, ইহুদি বিদ্বেষী জার্মান চ্যান্সেলরের প্রেমিকা ইভা ব্রাউন ছিলেন একজন ইহুদি। ১৯৪৫ সালে আত্মহত্যার আগে তারা বিয়ে করেছিলেন। ইভা তখন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হলেও তার পূর্বপুরুষরা ইহুদি ছিলেন- এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওই প্রামাণ্যচিত্রে। ইভা ব্রাউনের ব্যবহৃত চিরুনীতে লেগে থাকা চুলের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করে প্রমাণ মিলেছে তিনি ইহুদি বংশোদ্ভূত।

দ্য ডেড ফ্যামাস ডিএনএ নামে ওই প্রামাণ্যচিত্রটি আগামী বুধবার চ্যানেল ফোরে প্রচারিত হবে বলে জানা গেছে।

জার্মানির একনায়ক হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নির্বিচারে ইহুদিদের হত্যা করেন। ইহুদি শিশু ও বৃদ্ধদের পর্যন্ত গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন তিনি- যা ইতিহাসে হলোকাস্টে নামে পরিচিত। ইভা ব্রাউন যখন হিটলারের প্রেমে পড়েন তখন তিনি নেহায়েত কিশোরী। ইভার চেয়ে হিটলার তখন ২৩ বছরের বড়।

ইভা হিটলারকে প্রচণ্ড ভালোবাসলেও হিটলার মনে করতেন, এই অসম প্রেমের কারণে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। এ কারণে তিনি ইভাকে দূরে বার্গোফের আলপাইন আবাসিক এলাকায় রাখতেন।

ইভার চুলের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তার ডিএনএ সিকুয়েন্সের সঙ্গে আশকেনাজি ইহুদিদের দারুণ মিল রয়েছে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদিদের ৮০ শতাংশই এ গোষ্ঠীর জিন বহন করছে। উনিশ শতকে জার্মানির আশকেনাজি ইহুদিদের অনেকেই ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।

এই চুলটি সংগ্রহ করা হয়েছে মার্কিন সপ্তম পদাতিকের গোয়েন্দা কর্মকর্তা পল বায়েরের সংগ্রহে থাকা ইভা ব্রাউনের চিরুনি থেকে। একমাত্র এই সেনা কর্মকর্তাই ইভার সেই ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিলেন এবং তার ব্যবহৃত অনেককিছুই তিনি সংগ্রহ করেন। ১৯৪৫ সালে বোর্গোফে তোলা একটি আলোকচিত্রে ওই চিরুনি হাতে বায়েরকে দেখা গেছে। বায়েরের ছেলে অ্যালান বায়ের তাদের বাড়ির বেজমেন্টে রাখা নাৎসি বাহিনীর ব্যবহৃত অনেক অস্ত্রের মধ্যে একটি কসমেটিক বক্সে আয়না ও চিরুনিটি পান।

অ্যালান বায়ের জানান, তার বাবা ছিলেন জার্মান বংশোদ্ভূত ইহুদি। ১৯২৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র যান। আর ইহুদি হওয়ার সুবাদে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সিআইএর গুরুত্বপূর্ণ সোর্স হিসেবে কাজ করেন তিনি।

১৯৭০ এর দশকে বাবার মৃত্যুর পর অ্যালান বায়ের ওই চিরুনি এক ডিলারের কাছে বেচে দেন। সেই ডিলার আবার সেটি চুল বিশেষজ্ঞ জন রেজনিকোফকে দেন। টিভি প্রেজেন্টার মার্ক ইভান তার কাছ থেকে আটটি চুল কিনে নেন ২ হাজার ডলারে। আর ইভানের সংগৃহীত চুলই পরীক্ষা করেন একদল বিজ্ঞানী।

চ্যানেল ফোরে প্রচারিতব্য ডেড ফ্যামাস ডিএনএ সিরিজিটিতে এর আগে আরো কয়েকজন বিখ্যাত ব্যক্তির ডিএনএ নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন- রকস্টার এলভিস প্রিসলি, জন এফ কেনেডি, নেপোলিয়ন প্রমুখ।