1‘পরনে সস্তা ছাপা শাড়ি, ঢিলেঢালা ব্লাউজ, শরীর যেন একটু ঝুঁকে পড়েছে, মুখে বলিরেখার ছাপ স্পষ্ট, কঠিন জীবন-যাপনের সাক্ষী হাতের পাতা দু’টি, সস্তা চটির মধ্যে দেখা যাচ্ছে কাদামাখা পা, মাথায় টেনে বাঁধা খোঁপা। গুজরাটের রাজসোনা গ্রামের অন্য কোনো নারীর সঙ্গে পার্থক্য নেই তার। তারপরও পার্থক্য অনেক- তার স্বামী দেশের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। তিনি যশোদাবেন চিমনলাল মোদি।’ এভাবেই ভারতের বেসরকারি টেলিভিশন জি নিউজ সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলো প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর স্ত্রীকে।

মোদি কখনো তাকে স্বীকৃতি না দিলেও, জোর গলায় অস্বীকারও করেননি। কঠোর নজরবন্দিতেই জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি।

জানা গেছে, যশোদাবেন মনে করতেন তিনি দেখতে সুন্দর নন। তাই ছবি তোলায় ছিল তার প্রবল অনীহা। বিয়ের কিছুদিন পরই পড়াশোনা শেষ করতে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মোদি। স্বামীর সঙ্গে মানানসই হিসেবে গড়ে তুলতে ঢোলাকায় পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। ১৯৭২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশিক্ষণ নিয়ে আহমেদাবাদে তিন মাস শিক্ষকতা করেন।

গত ১৩ বছর ধরে তিনি রাজোসনা গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের লোকেরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েকবার আহমেদাবাদে গেলেও মোদি কখনোই তাকে সেখানে থাকতে বলেননি।

সাংবাদিকরা তার স্কুলে গেলে নিজের কাহিনী শোনাতে খুবই উৎসাহ দেখা যায় যশোদাবেনের মাঝে। কিন্তু স্কুলের কড়া নির্দেশ ছিল এক মিনিটও সময় নষ্ট করা যাবে না। তাই ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে কিছু বলব না। তিনি অনেক ক্ষমতাবান। এই চাকরি করেই আমাকে বাঁচতে হবে। আমার ভয় করছে।’ এটুকু বলেই সোজা হেঁটে ক্লাসরুমে ঢুকে যান তিনি। এরপর থেকেই গুটিয়ে নেন নিজেকে।

হয়ত মোদির স্বীকারোক্তিতে যশোদাবেনের এতকাল ধরে স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পাওয়ার আশায় নতুন হাওয়া লাগলো।