image

দৈনিক বার্তা – কিয়েভের অন্তর্বর্তী সরকারের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ফের পূর্ব ইউক্রেনের একটি শহরে এক পুলিশ ফাঁড়ি দখল করল রুশপন্থী বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ সকালে স্লোভিইয়ানস্ক শহরের ওই ফাঁড়িতে জনা চল্লিশের একটি সশস্ত্র বাহিনী ঢুকে পড়ে। তাদের প্রত্যেকের মুখই মুখোশে ঢাকা ছিল। এক এক জনের হাতে ছিল একাধিক আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। ফাঁড়ি দখলের পর পরই তারা সেখানে রাশিয়ার পতাকাও লাগিয়ে দেয়। গত দু’তিন দিন পূর্ব ইউক্রেনের শহরগুলিতে রুশপন্থীদের বিক্ষোভ কিছুটা হলেও কম ছিল। অনেকেই ভাবত শুরু করেছিলেন, কিয়েভের অন্তর্বর্তী সরকারের কড়া বার্তার ফলে পিছু হটেছে বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু আজকের ঘটনার পরে ফের নড়েচড়ে বসেছে কিয়েভ। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আরসেন আভাকভ আগের মতোই কড়া সুরে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে বিক্ষোভ থামাতে তাঁরা বল প্রয়োগ করতেও পিছপা হবেন না। আভাকভের এই বার্তা নিয়ে আবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মস্কো। রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাবরভ বলেছেন, “ইউক্রেন বল প্রয়োগ করলে শান্তি আলোচনার গোটা প্রক্রিয়াটাই বিপথে চলে যাবে। এখন কেউই আর সেটা চায় না।”

স্লোভিইয়ানস্ক শহরের মেয়র যদিও অন্য কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “যারা আজ ওই পুলিশ ফাঁড়ি দখল করেছেন তারা কেউই রুশপন্থী বিক্ষোভকারী নয়। এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা।” কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে এত আধুনিক অস্ত্র এল কোথা থেকে, তার উত্তর অবশ্য দিতে পারেননি মেয়র। যে সশস্ত্র বাহিনী ওই ফাঁড়ি দখল করতে গিয়েছিল, তাদের এক জন আবার সাংবাদিকদের স্পষ্টই বলেছেন, “আমরা পশ্চিমী দেশগুলির পা চাটতে পারব না। আমরা রাশিয়ার সঙ্গে থাকতে চাই। আর এটাই শেষ কথা।”

এই গোলমালের মধ্যেই আবার রাশিয়াকে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কিয়েভ। কিছু দিন আগেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মস্কো। তার প্রেক্ষিতেই কিয়েভের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, যে যুক্তিতে মস্কো গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, তা তারা মানে না। আর সেই কারণেই মস্কোকে বর্ধিত দাম তারা দেবে না। ফলে গ্যাসের দাম নিয়ে দু’দেশের মধ্যে নতুন করে কোনও টানাপড়েন শুরু হয় কি না, এখন সেটাই দেখার। কিয়েভ আর মস্কোর এই দড়ি টানাটানির জেরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সাবেক সোভিয়েত দেশগুলি। এস্তোনিয়া, লাতভিয়া এবং লিথুয়ানিয়া ইতিমধ্যেই ন্যাটোর শরাণপন্ন হয়েছে। এই তিনটি দেশই রাশিয়ার সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে। আর এদের প্রত্যেকেরই আশঙ্কা, ক্রাইমিয়ার মতো যে কোনও দিন রাশিয়া তাদের ভূখণ্ডও দখল করে নিতে পারে। এই অবস্থায় আগামী ১৭ এপ্রিল প্রথম দফার শান্তি আলোচনা শুরু হচ্ছে জেনিভায়। হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি ওই দিনই জেনিভা পৌঁছবেন। বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রাশিয়া, ইউক্রেন আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদেরও।