1আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল এবং আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অসমর্থ বিচার প্রার্থী জনগণকে বিপুল অর্থ ব্যয়ে সরকার আইনগত সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছেন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।আইনি সহায়তা দিবসকে সামনে রেখে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২৪ লাখ মামলা আইনজটে অসমাপ্ত রয়েছে। আমাদের এই সহায়তার উদ্দেশ্য যাতে করে আইন যট কমে আসে। তাই আমরা এ বছর এক কোটি টাকা সামনে বছর তার দ্বিগুণ টাকা সহায়তা দেয়া হবে।তিনি বলেন, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল মানুষ ছাড়াও এসিডদগ্ধ নারী-পুরুষ, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত মহিলা, বিনাবিচারে আটক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী, পাচারকৃত নারী-শিশুসহ সব আর্থসামাজিক কারণে বিচার পেতে অক্ষম নাগরিকদের সরকারি অর্থ ব্যয়ে আইনগত সহায়তা দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকার প্রত্যেক জেলা জজ আদালত ভবনে একটি লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপন করেছে। বর্তমানে আইনি সংস্থার তত্ত্বাবধায়নে সুপরিম কোট ইউনিট জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি এবং ইউনিয়ন কমিটি আইনগত সহায়তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জনগণকে আইনগত তথ্যসেবা প্রদানের জন্য হট লাইন সার্ভিস, ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে।

সরকারি খরচে আইন সহায়তা করাকে সরকারের কোনো দান কার্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দেশের সামগ্রিক জনগণের আইনি চাহিদা পূরণের লক্ষে এবং দেশের আইনগত প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করার লক্ষে আমাদের এ কাজ।

মন্ত্রী বলেন, অসহায় মানুষকে আমরা আইন সহায়তা দিয়ে আসছি। ২০০৯ থেকে ১৩ সাল পর্যন্ত আমরা ৬৪টি জেলায় কমিটি গঠনের মাধ্যমে ৬৭ হাজার নয়শ’ ৩৭ জনকে আইনি সহায়তা প্রদান করেছি। সারা দেশে আমরা ২৩ হাজার আটশত ৯৫টি মামলা নিষ্পত্তি করেছি। শুধু ১২/১৩ সালেই আইনি সহায়তা পেয়েছে ৬ হাজার পাঁচশ ৫২ জন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সাহেল শেখ মো. জহিরুল হক, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক সৈয়দ আমিনুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, সোমবার ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইন সহায়তা দিবস। এবারের শ্লোগান ‘গরীবের মামলার ভার, বহন করবে সরকার।

এদিকে, রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ আনস্টউট কর্তৃক আয়োজিত সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত জজদের ২৯তম ব্যাচের ট্রেনিং কোর্সের উদ্বোধনী অনষ্ঠিানে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, দেওয়ানি কার্যবিধি এবং অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধন করে অউজ- এর বিধান অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি সহায়ক আইন করা হয়েছে।

এছাড়াও বিচার কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত ও দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ফৌজধারি কার্যাবিধি সংস্কার করে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আদালতে মামলার জট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে আদালতের বাইরে বিকল্প বিরোধ পদ্ধতিতে নিয়োগের মাধ্যমে দ্রুতসময়ের মধ্যে রিহ-রিহ তৈরি করে মামলার পক্ষগণের মধ্যকার বিদ্যমান বহুসংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে আদালতের উপর মামলার চাপ কমবে এবং মামলার জটও হ্রাস পাবে।

তিনি বলেন,কোনো প্রতিষ্ঠানের সেবার মান বৃদ্ধিকরণে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুপরিকল্পিত, মানসম্মত ও কার্যকর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের বিকল্প নেই। তাই বিচারকার্যের গুণগত মান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত এ নীতিটি বিচারকদের ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য।

সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত বিচারকদের উদ্দ্যেশে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একজন বিচারকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিচার প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের আইন বিষয়ে পড়াশোনা থাকলেও বিচার কাজের গুণগত মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ।