দৈনিক বার্তা : শালবন বেল্ট বৃহত্তর ময়মনসিংহে ফুটেছে শটি ফুল । এই ফুল কিছুক্ষনের জন্য হলেও পথিকের দৃষ্টি কাড়ে । হাজার বছরের প্রাচীন শালবন। ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী বনাঞ্চলের পর বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন শালবন । এ বনকে দেশের মধ্যাঞ্চলীয় বনভূমি হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।
শালবন বেল্টের বৃহত্তর ময়মনসিংহের ময়মনসিংহ ,টাঙ্গাইল , জামালপুর ও শেরপুর এলাকার বিভিন্নস্থানে অযতœ অবহেলায় ফুটে শটি গাছ । শাল গজারি বন একসময় ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আর এ বনের স্থায়ী বাসিন্দা ছিল শটিসহ নানা জাতের ফুল-ফল ও লতাগুল্ম। মানুষের বর্বরতায় শালবন এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে এসে ঠেকেছে। তবুও হঠাৎ দু-একটি শটি কিংবা কেও ফুল আমাদের চমকে দেয়।
সারা দেশে কম-বেশি চোখে পড়লেও শটি পুরনো ও লালমাটি অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। এ ফুল মুগ্ধ হওয়ার মতো সুশ্রী। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে খোলা জায়গায় যেখানে শুধু মোটা ঘাস ছাড়া কিছুই নেই, সেখানে হলদে মাথা ছোট্ট ডাটির ওপর শটি ফুল দুর্লভ সৌন্দর্য ছড়ায়। বৈশাখে নতুন পাতা গজাবার আগে এ ফুল দেখা দেয়, আবার কিছু পাতা বের হওয়ার পরও দেখা যায়। পাতা ২ থেকে ৩ ফিট লম্বা দেখতে অনেকটা হলুদ গাছের পাতার মতো।
গোড়ার মূল বা কন্দটি দেখতে হলুদের মতো। এর নামই শটি। বিশেষ পদ্ধতিতে এর নির্যাসটুকু চটকে নিলে ময়দার মতো একটি দ্রব্য পাওয়া যায়। একসময় এর থেকে আবির হতো। তখন আবির তৈরি প্রায় কুটির শিল্পের পর্যায়ে ছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরও এর ব্যাপক চাহিদা ছিল। শটির কন্দ সুগন্ধযুক্ত। একসময় রান্না করে বার্লির মতো করে রোগীদের খাওয়ানো হতো। তাছাড়া দুধ-চিনি দিয়ে চমত্কার পায়েশও করা যায়। শটি বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবেও কাজে লাগে। তবে এখন আর শটির বহুমাত্রিক ব্যবহার নেই।