1দৈনিক বার্তা : সাতক্ষীরায় জামায়াত-শিবির ও পুলিশ সংঘর্ষে আমিনুল ইসলাম নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ পুলিশসহ আরো ১২ জন। তবে দায়িত্বশীল কোন সূত্র মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। রোববার বিকেল ৪টায় শহরের কামালনগর গোরস্থানের পাশে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জেলা পুলিশের তথ্য কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন জানান, শহরের কামালনগর গোরস্থানের পাশে জামায়াত-শিবির গোপন বৈঠক করছিল। এ সময় পুলিশ সেখানে অভিযানে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এতে ৫ পুলিশসহ ১২ জন আহত হন।

এদিকে, সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের পল্লীতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্র“পের সংঘর্ষে অন্তত: চারজন গুরুত্বর আহত হয়েছে।রোববার দুপুর ১২ টার দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন,কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের মাসুদ আলী বিশ্বাসের ছেলে খুলনা বিএল কলেজের ইসলামিক ইতিহাসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রুবেল বিশ্বাস (২৪), একই গ্রামের মোহর আলী বিশ্বাসের ছেলে খুলনা খানজাহান আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ডিপ্লোমা বিভাগের পরীক্ষার্থী ফিরোজ বিশ্বাস (২৬), একই গ্রামের বড়বুলা আক্কাজের ছেলে আব্দুল মাজেদ ঘুঘু (৩৫) ও আহাদুল গাজীর ছেলে নুরুল গাজী (৩৩)।

কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাহারুল বিশ্বাস ও আওয়ামী লীগ কর্মী আবুল হোসেন বিশ্বাস জানান, তারাসহ বিশ্বাসপাড়ার অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অপরদিকে গাজী পাড়ার আব্দুল বারি, ফজর আলী, আবুল কালামসহ একটি মহলের বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্বাসপাড়া ও গাজী পাড়ার দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছে। উপজেলা নির্বাচনের পর এ বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।

তারা আরো জানান, গত ২১ এপ্রিল বিকেলে কৃষ্ণনগর কৃষাণ মজদুর ইউনাইটেড একাডেমীর সামনের রাস্তায় গাজীপাড়ার এরশাদ, মিজান, বাচ্চু ও উজ্জ্বল বিশ্বাসপাড়ার ফিরোজ বিশ্বাসের পায়ের উপর সাইকেল তুলে দেয়। এ নিয়ে উভয় গ্র“পের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। শনিবার সকাল ১১ টার দিকে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিশ্বাস গ্র“পের লোকজনের ধাওয়া খেয়ে গাজী গ্র“পের লোকজন পালিয়ে যায়। দুপুর ১২ টার দিকে গাজী গ্র“পের বারি ডাকাত, ফজর ডাকাত, আজি ডাকাত, মিজান ডাকাত, আব্দুল মাজেদ ঘুঘু, নুরুল গাজীসহ ২০/২৫ জন হাতে বোমা, পাইপগান, দা ও লাঠি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবস্থান করা রুবেল ও ফিরোজকে লক্ষ্য করে পরপর তিন চারটি বোমা ও গুলি চালায়। বোমার আঘাতে রুবেল ও গুলিতে ফিরোজ আহত হয় । এ সময় নিজের কাছে থাকা বোমা বিষ্ফোরিত হয়ে আব্দুল মাজেদ ঘুঘু ও নূরুল গাজী জখম হয়। আহত ফিরোজ ও রুবেলকে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘুঘু ও নূরুলকে একটি প্রাইভেটে করে গোপন আস্তানায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।এ ব্যাপারে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ আশরাফুল ইসলাম জানান, ফিরোজের মাথায় গুলি ও রুবেলের শরীরে বিস্ফোরক দ্রব্যের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

তবে গাজী গ্র“পের ফজর ডাকাত জানান, বিশ্বাস গ্র“পের লোকজন তাদের উপর অহেতুকভাবে বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে তাদের দু’জন জখম হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম রহমান জানান, উভয়পক্ষের চারজন জখম হয়েছে মর্মে তিনি শুনেছেন। তবে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এনিয়ে কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।