2দৈনিক বার্তা :একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাবেক এমপি পলাতক মো. আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত

৯৯ পৃষ্ঠা মূল প্রতিবেদন এবং দলিলপত্র ও অন্যান্য তথ্যসহ মোট ১ হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে দাখিল করা হবে।

তদন্ত সংস্থার কো অর্ডিনেটর মো. আব্দুল হান্নান ও কো অর্ডিনেটর সানাউল হক সোমবার ধানমণ্ডি তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

তারা জানান, মুসলিম লীগের সাবেক এই নেতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় ৩৬ জনকে হত্যা-গণহত্যা, প্রায় ২০০ জনকে ধর্মান্তরিত এবং লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে ৫৫৭টি বাড়িঘর ধ্বংস করাসহ ৫ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

পলাতক এই মুসলীম লীগ নেতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে মঠবাড়িয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় এসব অপরাধ সংগঠিত করেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংস্থা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি মঠবাড়িয়া উপজেলার খেতাদিরা গ্রামে। ১৯৫৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর মুসলীম লীগের তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা আরশেদ আলীর মেয়েকে বিয়ে করে শ্বশুরের রাজনৈতিক প্রভাবে মুসলীম লীগে যোগদান করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বে মঠবাড়িয়া থানার সকল প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হতো।

তারা জানান, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে করা মামলায় মোট ৪৬ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন ২০১৩ সালের ১৯ মে থেকে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত তদন্ত করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জব্বার মঠবাড়িয়া এলাকায় সশস্ত্র রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলেন। তার নেতৃত্ব, নির্দেশনায় এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর জব্বার ইঞ্জিনিয়ার জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি থেকে ১৯৮৬ ও ৮৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তার দুই ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। দুই মেয়ে বিবাহিত, যাদের একজন ফ্লোরিয়ায় বসবাস করেন। জানা যায়, তিনি ফ্লোরিডায় মেয়ের বাসায় অবস্থান করছেন।