2দৈনিক বার্তা : আগামী (২০১৪-১৫) অর্থবছরে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা ৩০ হাজার টাকা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব  বোর্ড (এনবিআর)। এ হিসাবে নতুন অর্থবছরে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা হবে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়  বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। আগামী অর্থবছরের বাজেট  পেশের দিন অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে চূড়ান্ত  ঘোষণা  দেবেন বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন,ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতির মধ্যে সাধারণ মানুষের করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ালে এনবিআরকে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। এ বিবেচনা থেকেই ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ২০ হাজার  থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। ফলে আগামী অর্থবছর  থেকে ব্যক্তিপর্যায়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর কোনো কর দিতে হবে না।

তার পরের তিন লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ১০ শতাংশ, পরবর্তী চার লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ১৫ শতাংশ ও এর পরের ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ কর পরিশোধ করতে হবে। অবশিষ্ট  মোট আয়ের ওপর কর দিতে হবে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ হারে। ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হলেও কর কাঠামোর অন্যান্য স্তর বা আয়করের হার অপরিবর্তিতই থাকছে।

এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনা করেই করমুক্ত আয়সীমা আরো ৩০ হাজার টাকা বাড়ানো হচ্ছে। এতে এনবিআরের রাজস্ব আহরণে সামান্য নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের পক্ষ  থেকেও করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবি  তোলা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, পণ্যমূল্যের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রচলিত কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয়সীমা এর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠছে। পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেই করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন।

এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায়মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) পক্ষ থেকে ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা আরো ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর জোর দাবি  তোলা হয়। সংগঠনটি করমুক্ত আয়সীমা বিদ্যমান ২ লাখ ২০ হাজার   থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার প্রস্তাব করে। নারী ও জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ৩ লাখ ও প্রতিবন্ধীদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দুই ধরনের প্রভাব পড়ে। মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পায়। করদাতাদের বড় একটি অংশ এতে লাভবান হয়। তবে রাজস্ব আয়ের ওপর কিছুটা  নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কারণ  দেশের সব করদাতার কাছে রাজস্ব নেয়ার সময় করমুক্ত আয়সীমার অংশ বাদ দিতে হবে। এতে ধনী করদাতাদের স্লাবে পরিবর্তন আসবে।  কোনোভাবেই এটা কাম্য নয়। সুতরাং সব দিক বিবেচনা করেই কর বিভাগকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।