1দৈনিক বার্তা : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানোর অভিযোগ করে রাজ্যের মুুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে দাঙ্গাবাজ ও রাজনীতির শয়তান বলে আখ্যায়িত করেছেন। শ্রীরামপুরে দেয়া মোদির বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মমতা ব্যানার্জি সোমবার কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলায় বাঙালি-অবাঙালি এবং ধর্মীয় বিভেদ তৈরিতে সচেষ্ট মোদি।
উল্লেখ্য, রোববার শ্রীরামপুরের সভায় মমতার বিরুদ্ধে আচমকা আক্রমণ শানিয়েছিলেন মোদি। আসানসোলে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ উদ্ধৃত করে এদিন তিনি অভিযোগ করেন, হিন্দিভাষীদের বাংলার অতিথি বলে মনে করলেও বাংলাদেশীদের প্রতি যথেষ্ট দুর্বল মুখ্যমন্ত্রী। মোদি বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের ১৬ মে পর ভারত থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা করেন। মমতা মন্তব্য করেন, গুজরাটের মতো বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করার চেষ্টা সফল হবে না। তার প্রশ্ন, গুজরাটে রক্তগঙ্গা বইয়ে এসেছে। এখানে কি সমুদ্র বওয়াবে? একই সঙ্গে তিনি সাবধান করে দেন, এই মানুষটা যদি ভারতে প্রধানমন্ত্রী হয়, তবে দেশে কালো দিন ফিরে আসবে। তিনি মোদিকে দাঙ্গাবাজ ও শয়তান বলে আখ্যায়িত করেন।
বস্তুত বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে এদিন একের পর এক তোপ দাগেন মমতা। গোধরা কাণ্ডের স্মৃতি উস্কে দিয়ে তার দাবি, এখনও পর্যন্ত গুজরাট যা করে দেখাতে পারেনি, বাংলা সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বরাবর রক্ষা করে চলেছে। শ্রীরামপুরের সভামঞ্চ থেকে বাংলায় জাতিদাঙ্গার বাণী প্রচার করে লাভ হবে না বলে কটাক্ষ করেন তিনি। একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে একহাত নিয়ে নমোর (নরেন্দ্র মোদি) প্রচারে পেইড নিউজ সম্পর্কেও কটাক্ষ করেন তিনি।
এদিনই নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের সিডি তলব করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। এই ভাষণে মোদির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বাক্স-প্যাটরা সমেত ছুড়ে ফেলে দেব বলে ঘোষণা করেন মোদি।
মোদির ঔদ্ধত্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এদিন মমতার পাল্টা হুংকার, বাংলার বুকে জাতপাতের রাজনীতি কোনোদিনই সমর্থন করা যাবে না। মোদির নামোচ্চারণ না করে তিনি বলেন, ইতিহাস বিশ্র“ত হয়েছেন তিনি। অখণ্ড বাংলার কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, নানা জাতি ও ধর্মের মানুষকে চিরকাল বাংলা ঠাঁই দিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলায় জাতিদাঙ্গার বাণী প্রচার করে লাভ হবে না।
এদিকে, বাংলাদেশীদের ভারত ছাড়া করা হবে মোদির এমন বক্তব্যের জবাবে বাংলাদেশের বিপদগ্রস্তরা সবসময়ই ভারতে আশ্রয় পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন মমতা ব্যানার্জি। এ সময় তিনি বলেন, প্রত্যেকেই সুবিধা-অসুবিধায় পড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নেন। তা গুজরাট হোক, আসাম হোক বা বাংলাদেশ। আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে আমরা যথেষ্ট ভালোবাসি। তারা যদি কোনো বিপদে পড়েন তাহলে আমরা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না।