Narayanganj-bangladesh-pictureদৈনিক বার্তা : নারায়ণগঞ্জ, ৫ মে ২০১৪ : জেলার সদর উপজেলায় ভোলাইল গেউদ্দার বাজার এলাকায় রোববার রাতে এক দম্পতি খুন হয়েছেন। আমানউল্লাহ (৬০) ও হোসনে আরা (৩৫) নামে ওই স্বামী ও স্ত্রী গত মধ্যরাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সোমবার দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।

নিহত আমানউল্লাহর বাড়ির ভাড়াটিয়ারা জানান, নিহত ওই দম্পতি দোতলা বাড়ির নিচ তলায় থাকতেন। বাড়ি সংলগ্ন চল্লিশটি টিনশেড ঘরে তাদের ভাড়াটিয়ারা থাকেন। রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে কয়েকজন ভাড়াটিয়া বাড়ির ভেতর থেকে আমানউল্লাহর বড় মেয়ে হাবিবার ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখেন, বিছানায় আমানউল্লাহর লাশ বিছানার ওপর পড়ে রয়েছে। বিছানার নিচে পড়ে আছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হোসনে আরার লাশ। আমানউল্লাহর গলায় জবাইয়ের চিহ্ন। হাতে, কোমড়ে ও পায়ে জখমের চিহ্ন। তার স্ত্রীর শরীরেরও বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।  নিহতের এক প্রতিবেশী জানান, আমানউল্লার প্রথম স্ত্রী রাজিয়া বেগম রিনা তার ছেলে আরিফের সাথে থাকেন। এ বাড়ির নিচতলার পশ্চিম দিকে একটি ফ্ল্যাটে নিহতের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে হাবিবা বাস করেন। নিচতলারই পূর্বদিকের ফ্ল্যাটে আমানউল্লাহ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। প্রায় এক বছর আগে আমানউল্লাহ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। পঁয়তাল্লিশ শতাংশ জমির ওপরে নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটির বিসিক শিল্প নগরীর অদূরে ভোলাইল এলাকায় আমান উল্লাহর বাড়ি। এছাড়া তার আরো জায়গা-জমি রয়েছে।

জমি ও বাড়ির ভাগ নিয়ে বড় স্ত্রী ও তার ছেলের সাথে আমান উল্লাহর প্রায় এক বছর ধরে বিরোধ চলছে। এক বছর আগে তার বাসায় বড় ছেলের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ ঘটনা নিয়ে মামলাও হয়। এ বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ভাড়াটিয়ারা ধারণা করছেন। আমানউল্লাহর ছোট মেয়ে মুন্নি পাবনা জেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছে। বাড়ির দোতলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সেখানে কেউ থাকে না।  ঘটনাস্থলে পরিদর্শনের পর ফতুল্লা থানার এস আই আবুল বাশার জানান, এলাকাবাসির কাছে খবর পেয়ে আজ ভোর ছয়টায় তারা সেখানে যান। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের প্রথম স্ত্রী’র ভাই আলমগীর ও আবু বকর নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  স্বামীর সাথে দাম্পত্য কলহের কারণে নিহতের বড় মেয়ে হাবিবা এ বাড়িতেই থাকতো। তার স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর। খুনিরা বাড়ির কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। তবে কলাপসিবল গেটের ভেতরে নিহতরা যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিলো।  লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ টেস্টের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছে।  এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।