2 দৈনিক বার্তা : পিলখানা বিডিআর হত্যা মামলায় ৬৯ জন আসামির খালাস  দেওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করা হয়। এতে এই ৬৯ আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল  চেয়ে সাজার আরজি জানানো হয়েছে।

আপিল দায়েরের বিষয়টি জানিয়ে  ডেপুটি অ্যাটর্নি  জেনালের ফরহাদ আহমেদ বলেন, রায়ে ২৭৮ জনকে খালাস  দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৬৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্য প্রমাণ থাকায় আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।আগামী সপ্তাহে আপিল আবেদন গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হবে।

পিলখানা হত্যা মামলায় গত বছরের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায়  দেন। এতে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন, ২৫৬ বিভিন্ন  মেয়াদে (তিন বছর  থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত) কারাদণ্ড এবং ২৭৮ জনকে খালাস  দেওয়া হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও জানান, আসামিদের  ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যু দণ্ডাদেশের অনুমোদন) হাইকোর্টে এসেছে। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ  থেকে আপিল করা হয়েছে।  পেপার বুক প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গত ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত ওই মামলায় ২৭৭ জনকে খালাস দিলেও বাকিদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় আপিল করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী  ডেপুটি অ্যাটর্নি  জেনারেল ফরহাদ  হোসেন।

তিনি বলেন, ওই রায়ের পর খালাসপ্রাপ্ত সব আসামির বিষয়ে সাক্ষ্যপ্রমাণ আমরা পর্যালোচনা করেছি। আমাদের মনে হয়েছে, এই ৬৯জনের বিরুদ্ধে পর‌্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ থাকার পরও বিচারিক আদালতে তারা খালাস  পেয়ে গিয়েছিলো। তাই তাদের যথাযথ শাস্তি  চেয়ে আমরা আপিল করেছি।

তিনি জানান, এখন আমরা আপিল গ্রহণযোগ্যতার জন্য  কোন একটি আদালতে শুনানির আবেদন করবো।২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬  ফেব্র“য়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিদ্রোহের প্রায় দুই বছর পর এ বাহিনীর নাম বদলে  ফেলা হয়, যে বিদ্রোহে তখনকার মহাপরিচালক  মেজর  জেনারেল শাকিল আহমেদসহ বিডিআরে কর্মরত অর্ধশতাধিক  সেনা কর্মকর্তা নিহত হন।

বিডিআর বিদ্রোহের সময় পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১৫২ জনকে জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড  দেয় আদালত। ৮৪৬ জন জীবিত আসামির মধ্যে ২৭৭ জন বেকসুর খালাস পান। তাদের মধ্যে ১৬১ জনকে  ওেদয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে।

বিদ্রোহের  নেতৃত্ব  দেয়া বিডিআরের উপ সহকারী পরিচালক তৌহিদুল আলমসহ (৫৫) বাহিনীর ১৫২ জওয়ান ও নন কমিশন্ড কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয় রায়ে। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড  নেতা  তোরাব আলীও রয়েছেন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে। তাদের দুজনকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।ওই দণ্ডের পর মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়াদের মামলা অনুমোদনের জন্য হাই  কোর্টে এসেছে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা ব্যক্তিরাও আপিল করেছে।