1নাজিম হাসান/দৈনিক বার্তা : রাজশাহীর বাগমারায় বিভিন্ন মাদকের রম রমা ব্যবসায় অভিভাবক মহল তাদের উর্তি বয়সের তরুন সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। করণ নেশা ফেন্সিডিলের চেয়ে এখন ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েছে মাদকসেবীরা। বহন ও সহজে পাওয়ার সুবিধার জন্য মাদকসেবীদের কাছে ইয়াবা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া এই মাদক বাগমারায় নতুন আমদানী হওয়ায় কৌতুহলী অনেক মাদকসেবীরা পরখ করে দেখতে শুরু করেছে ইয়াবার গুনাগুন। মূলত বাগমারার টাকাওয়ালারা এবং সৌখিন মাদকসেবীদের মধ্যে ক্রমেই ইয়াবার ব্যবহার বাড়ছে। এই প্রথম বাগমারায় কোন মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে ইয়াবার সন্ধ্যান পেয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় থানায় মামলা হলে পরে মাদক ব্যবসায়ীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাগমারা থানার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী  ও প্রায় হাফডজন মাদক মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামী ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল¬ার জুলেখা বেগম ওরফে জুলি আপা(৩৮) সম্প্রতি ফেনসিডিল আমদানী ব্যাপক বৃদ্ধি করেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৪ এপ্রিল থানার তৎকালীন ওসি(বর্তমানে মোহনপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত) আব্দুল হামিদ জুলেখা বেগমকে ধরার ফাঁদ পাতে। তারা ক্রেতাবেসী সোর্স পাঠিয়ে ১৭ বোতল ফেনসিডিল ক্রয়ের সময় জুলেখা বিবিকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। এ সময় পুলিশ জুলেখার ঘরে তল¬াসী চালিয়ে ৭০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরে পুলিশ জুলেখাকে গ্রেফতার করে বাগমারা থানায় নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে ইয়াবা ব্যবহারকারীর নাম।  তবে ফেনসিডিল ব্যবহারকারীর তুলনায় ইয়াবা ব্যবহারকারীরা সমাজের অনেক উচু শ্রেণির হওয়ায় পুলিশ তাদের নাম প্রকাশে সতর্কতা অবলম্বন করে।  এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি আব্দুল হামিদ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুলেখা বেশ কিছু ইয়াবাসেবীর নাম জানিয়েছে তারা সবাই সমাজের উচু স্তরের টাকাওয়ালা। তারা কখনও নিজেরা ইয়াবা ক্রয় করতে আসেনা লোক পাঠিয়ে নিয়ে যায়। জুলেখার মামলাটি রজু হওয়ার পর হটাৎ তার বদলী আদেশ হওয়ায় তিনি এ বিষয়ে আর তদন্ত করতে পারেননি। তার দেয়া তথ্য মতে ইয়াবাসেবীর এই তালিকায় রয়েছেন ইটভাটা ও চাতাল মালিক, রড সিমেন্টর ব্যবসায়ী, প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার, কলেজের অধ্যক্ষ ও রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীর নাম। ইয়াবাসেবীর এই তালিকা ক্রমে বেড়েই চলেছে। জুলেখার দেয়া তথ্য মতে প্রথমে সে চালান প্রতি ৫০ থেকে ১০০ পিচ ইয়াবা আমদানী করলেও ক্রমেই এর চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকায় এখন প্রতি চালানে সে ২০০ পিচ করে ইয়াবা আমদানী শুরু করে। তার কাছে ফেনসিডিলের তুরনায় ইয়াবা ব্যবসা ব্যাপক নিরাপদ ও অধিক লাভজনক হওয়ায় সে এক সময় ফেনসিডিল ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জুলেখার তথ্যমতে ফেনসিডিল ব্যবসায় বাঁকী পড়ে এবং নোংরা স্বভাবের মাদকসেবীরা এর ক্রেতা হওয়ায় প্রায় তাদের সাথে ঝগড়া বিবাদ লাগত। এছাড়া স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ভেজাল যুক্ত ফেনসিডিল ব্যবসায়ীরা এর মধ্যে ডুকে পড়ায় এ ব্যবসা থেকে তেমন লাভ হতনা। সেই তুলনায় ইয়াবা অনেক খানদানী ব্যবসা। ক্যাশ শর্ট পড়লেও ইয়াবাসেবীদের শরনাপন্ন হলে তারা লোক মারফৎ টাকা পাঠিয়ে দিত। এভাবে ইয়াবার ব্যবহার বাগমারার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে। আর এ খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সতেচন মহলকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগামারা থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবু ওবায়দা খান জানান, আমি এ থানায় নতুন যোগদান করেছি। জুলেখার মামলার বিষয়ে জানা থাকলেও বিষয়টির পূর্ন তদন্ত না হওয়ায় নিদৃষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মাদক বিষয়ে এলাকাবাসী তাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তিনি কঠোর ভুমিকা রাখবেন বলে মন্তব্য করেন।