Sugar Picটিপু সুলতান/দৈনিক বার্তা :  মোবারকগঞ্জ চিনি কলের মাড়াই মৌসুম শেষ হবার ১ মাস অতিবাহিত হবার পরও এলাকার কৃষকরা তাদের আখ বিক্রির টাকা না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অপরদিকে সাধারন শ্রমিক কর্মচারিরা গত তিন মাস যাবত বেতন ভাতা পাচ্ছে না। অনেক শ্রমিক কর্মচারি দুর দুরান্তো থেকে এসে মোসুমি চাকরি শেষকরে তারা তাদের পাওনা না পেয়ে প্রতিদিনি মিলে ধর্না দিচ্ছে॥  পাওনা টাকা নানিয়ে তারা দেশের বাড়িতে ফিরতে পারছে না। জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে খোলা বাজারে চিনি বিক্রি শুরু করেছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন ও অন্রান্র কর্মকর্তরা। গত কয়েকদিন ধরে নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলায় তিনি উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের দিয়ে চিনি বিক্রী করাচ্ছেন। কৃষকদের ভয়ে কর্মকর্তারা অনেকটা পালিয়ে বেড়াচ্ছে তখন মিলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চিনি বিক্রির ঘটনা শিল্পটি রক্ষায় নতুন উৎসাহের সৃষ্টি করেছে। বিগত তিনটি মাড়াই মৌসুমের উৎপাদিত চিনি বিক্রি করতে না পারায় গুদামে বস্তাবন্দী হয়ে পড়ে আছে প্রায় ১৭ হাজার ৩৪৬ মেট্রিক টন চিনি। এর মধ্যে চলতি ২০১৩-১৪ মৌসুমে এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন। গত ২০১২-১৩ মৌসুমের চিনি রয়েছে ৭ হাজার ৪৫ মেট্রিক টন। ২০১১-১২ মৌসুমের উৎপাদিত চিনি রয়েছে ৩৮২ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা। ১৯৬৮ সালে আখ মাড়াইয়ের মধ্য দিয়ে প্রথম যাত্রা শুরু হওয়া এ মিলটির চিনি বিক্রি না হওয়ায় শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন-ভাতা বাবদ দেনা প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। কৃষকদের ২১ কোটি এবং অবসর প্রাপ্তদের ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া পুঞ্জীভূত দেনা রয়েছে ১২৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ফলে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার দেনা মাথায় নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মিলটি। তবে অবসরপ্রাপ্ত অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী টাকার পরিবর্তে চিনি নিয়ে যাচ্ছে। চলতি ২০১৩-১৪ মাড়াই মৌসুমে মিলটি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ১৩ ডিসেম্বর আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করে।
চিনিকলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান,  দেশের সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন চিনিকলে উৎপাদিত চিনি থেকে বেসরকারি মিলের চিনির দাম কম হওয়ায় তা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া  বিদেশ থেকে আমদানি করা ও বেসরকারি মিলের চিনি সাদা হওয়ায় জনগণ সেই চিনির প্রতি আগ্রহী বেশি। কিন্তু সাধারণ মানুষ জানেই না যে আমাদের দেশীয় মিলে উৎপাদিত চিনি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত। জানলে কখনোই বাজারের সাদা চিনি কিনত না। তাই তাদের উদ্বুদ্ধ করতেই খোলা বাজারে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে। এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে ব্যায় হয় প্রায় ৯২ টাকা সেখানে চিনি বিক্রী করতে হয় ৩৮ থেকে ৪০ টাকা।